ভারতের দিল্লি থেকে ১৫ টন ভেজাল মসলা ও কাঁচামাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। সন্দেহ করে বলা হচ্ছে, এসব মসলা পচা ভাত-রুটি-কাঠের গুঁড়া দিয়ে তৈরি হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার করাওয়াল নগরে পচা ভাত-রুটি-কাঠের গুঁড়ার নষ্ট পদার্থ দিয়ে মসলা তৈরি হচ্ছিল। অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে, দিল্লিতে এ মসলার বাজার জমজমাট। দেখতেও আসল মসলার মতো।
যারা এ অপকাণ্ডে জড়িত, তারা ভেজাল মসলা আসলের দামে দিল্লি, এনসিআরের স্থানীয় বাজার ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ‘খাঁটি মসলা’ বলে সরবরাহ করছিল।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পচা ভাত-রুটি-কাঠের গুঁড়া ছাড়াও মসলার স্বাদ আসলের মতো রাখতে বিশেষ অ্যাসিড ব্যবহার করতো অপরাধীরা। মরিচের গুঁড়াও ব্যবহার করা হতো। উত্তর-পূর্ব দিল্লির একাধিক ব্যবসায়ী এ অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে নকল মসলার ব্যবসা চলছে। তারা নকল মসলার দুই প্রস্তুতকারক ও এক বিক্রেতাকে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। এ ছাড়া মসলা তৈরির বহু সরঞ্জাম, ১৫ টন ভেজাল মসলা ও কাঁচামাল জব্দ করেছে। দিল্লি পুলিশ ও ডিপার্টমেন্ট অব ফুড অ্যান্ড সেফটির পক্ষ থেকে অভিযানের মাধ্যমে এসব কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
এ ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন দেশের বাইরে ভেজাল মসলা রপ্তানির অভিযোগ উঠেছে প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে ‘এমডিএইচ’ মসলার চালানের ৩১ শতাংশ নিষিদ্ধ করেছে। এ ছাড়া হংকং ও সিঙ্গাপুরে ভারতের এমডিএইচ ও এভারেস্টের মসলা নিষিদ্ধ করেছে। এমডিএইচ ও এভারেস্ট মসলা ভারতসহ ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকায় বিক্রি হয়।
সিঙ্গাপুর এভারেস্টের একাধিক মসলায় উচ্চ মাত্রার ‘কারসিনোজেনিক পেস্টিসাইড ইথিলিন অক্সাইড’ পাওয়া পেয়েছে। যা মানুষের খাওয়ার জন্য অনুপযুক্ত এবং দীর্ঘদিন খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও রয়েছে। হংকং এবং সিঙ্গাপুরের এই পদক্ষেপের পর ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)’ দুটি সংস্থার পণ্যের মান পরীক্ষা করা শুরু করেছে। তবে মসলা প্রস্তুতকারক এমডিএইচ বলেছে, তাদের পণ্যগুলো নিরাপদ। তারা মসলার বিষয়ে হংকং বা সিঙ্গাপুরের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পায়নি।