গাজার বিভিন্ন অবস্থানের ব্যাপারে ইসরায়েলকে বিস্তারিত তথ্য দিতে অঞ্চলটির আকাশে অন্তত ২০০টি গোয়েন্দা নজরদারি মিশন চালিয়েছে ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ারফোর্স। সব মিলিয়ে ১ হাজার ঘণ্টারও বেশি ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর নজরদারি বিমানগুলো গাজার আকাশে গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়েছে। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম ডিক্লাসিফায়েড ইউকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিক্লাসিফায়েড ইউকের বরাত দিয়ে লেবাননী সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদিন জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার কয়েক দিন পর থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নজরদারি চালিয়েছে ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স।
ডিক্লাসিফায়েড ইউকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সাইপ্রাসে অবস্থিত ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্সের ঘাঁটি আরএএফ আক্রোতিরি থেকে অন্তত ২০০ ফ্লাইট গাজার আকাশে ১ হাজার ঘণ্টার বেশি নজরদারি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ব্রিটিশ বাহিনীর এই প্রচেষ্টা মূলত গাজার বিষয়ে যথেষ্ট নজরদারি প্রচেষ্টাকেই ইঙ্গিত করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এসব ফ্লাইটকে গাজায় হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের উদ্ধারে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও, পরে এসব তথ্য ইসরায়েলি বাহিনী সামরিক অভিযানে ব্যবহৃত হয়েছে বলেও সন্দেহ করা হয়।
এই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়, গাজায় ত্রাণকর্মীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় তিন ব্রিটিশ নাগরিক নিহত হওয়ার পর। ইসরায়েলি বাহিনী যখন এই হামলা চালায় তখন রয়্যাল এয়ারফোর্সের একটি নজরদারি ফ্লাইট গাজার আকাশে ছিল। এই বিষয়ে তদন্তের ক্রমবর্ধমান দাবি থাকলেও ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে নজরদারির পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে।
ডিক্লাসিফায়েড ইউকের অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স তাদের নজরদারি বিমান শ্যাডো আর-১ ব্যবহার করে এই নজরদারি চালিয়েছে। এই বিমানগুলো রয়্যাল এয়ারফোর্সের ১৪ নম্বর স্কোয়াড্রন এই বিমানগুলো পরিচালনা করে। প্রতিবেদন অনুসারে, এই বিমানগুলো ইতালিও গিয়েছে কোনো অজানা কারণে।
এদিকে, হামাসের হাতে ব্রিটিশ জিম্মি থাকার পরও ইসরায়েল গাজায় যে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে সে বিষয়ে ব্রিটেনের সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নানা বিতর্ক থাকার পরও ব্রিটিশ সশস্ত্রবাহিনী মধ্যপ্রাচ্যে এর নজরদারির আওতা বাড়িয়েছে। এবং গাজায় নজরদারির বিষয়ে বারবার জানতে চাওয়ার পরও ব্রিটিশ সরকার এই বিষয়ে বিস্তারিত ও নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি।