• বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০ পূর্বাহ্ন

উত্তাল জর্জিয়া, বিরোধী নেতাদের মারধর

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

রাশিয়ার সাথে সঙ্গতি রেখে পশ্চিমাদের প্রতিপক্ষ না হওয়ার জন্য জর্জিয়াকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পার্লামেন্টে ‘ক্রেমলিন-অনুপ্রাণিত’ একটি আইন পাস করা নিয়ে রাস্তার গণবিক্ষোভকে অস্বীকার করার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে এমন কথা বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার জর্জিয়ার পার্লামেন্টে ‘বিদেশি এজেন্ট’ বিল পাস হওয়া, সাবেক সোভিয়েত ভুক্ত রাষ্ট্রটির সমস্যাযুক্ত ইতিহাসে আরেকটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হতে পারে বলে নিজ আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট জিম ও’ব্রায়েন।

প্রভাবশালি বৃটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়ে বলা হয়ঃ জর্জিয়ান সরকার ফের রাশিয়ার সারিবদ্ধ হচ্ছে- এমন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে ও’ব্রায়েন জানান, দেশটিকে দেওয়া তহবিলে শীঘ্রই লাগাম টানা হতে পারে। তিনি বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর জর্জিয়ার পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্র বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করেছে এবং দেশটির অর্থনীতি ও সামরিক বাহিনীর জন্য আরও কয়েক মিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

তিবলিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ও’ব্রায়েন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এখন অংশীদার নয়, বরং প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হলে সবকিছু পর্যালোচনা করা উচিত।

এদিকে, বিতর্কিত ‘বিদেশি এজেন্ট’ বিল নিয়ে জর্জিয়ার সংসদ সদস্যরা যখন দেশের ভবিষ্যত নিয়ে ঝগড়া করছিলেন তখন সংসদ ভবনের বাইরে এখন পর্যন্ত বৃহত্তম বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে মুখোশধারী দাঙ্গা পুলিশ টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভ থামানো নিরর্থক প্রচেষ্টায় চালাচ্ছিল।

রাতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলতে থাকে। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট থেকে প্রায় ০৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হিরোস স্কোয়ারে মিছিল করেন এবং আশেপাশের রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ করে রাখেন।

উল্লেখ্য, উক্ত আইনের অধীনে, জর্জিয়ার গণমাধ্যম কিংবা নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো যারা বিদেশ থেকে নিজেদের তহবিলের ২০% এরও বেশি গ্রহণ করে থাকে, তাদের “বিদেশি শক্তির স্বার্থ পরিবেশনকারী সংস্থা” হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বিলটিকে “ক্রেমলিন-অনুপ্রাণিত” বলে অভিহিত করেছে, কারণ এতে ভ্লাদিমির পুতিন কর্তৃক ২০১২ সালে রাশিয়ায় প্রবর্তিত আইনের প্রতিধ্বনি রয়েছে। অনেকেই বলেন, সমালোচকদের চুপ করার জন্য ওই আইনটি ব্যবহার করা হয়েছিল।

ও’ব্রায়েন বলেন, নতুন এই আইন এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পশ্চিমা বিরোধী বক্তব্যের কারণে জর্জিয়ার সঙ্গে (যুক্তরাষ্ট্রের) কৌশলগত সম্পর্ক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলি সোমবার দাবি করেছেন যে, দেশটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন ‘গ্লোবাল পার্টি অফ ওয়ার’ এর শিকার হচ্ছে। এটা সে রকম ভাষার প্রতিধ্বনি, ইউক্রেনে পশ্চিমাদের সাহায্যের বিষয়ে ক্রেমলিন যে রকম ভাষা ব্যবহার করে থাকে।

ও’ব্রায়েন অবশ্য এমন মন্তব্যকে ‘অবাস্তব এবং জর্জিয়ার সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পর্কের সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝি’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলছিলেন, ‘যদি আইনটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম না মেনে এগোয় এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যদের বিরুদ্ধে এই ধরণের বক্তৃতা ও আক্রোশ চলতে থাকে তাহলে আমি মনে করি (দুই দেশের) সম্পর্ক ঝুঁকিতে পড়বে।

তিনি জর্জিয়ান পুলিশকে তিবলিসির রাস্তায় চলমান শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানান এবং যারা অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছেন তাদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আহ্বান জানান।

বিরোধী দলের অনেক নেতাকেই অজ্ঞাত গ্যাং দ্বারা রাস্তায় খারাপভাবে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ কর্তৃক বিক্ষোভকারীদের ঘুষি ও লাথি মারার ফুটেজও ধারণ করা হয়েছে।

ও’ব্রায়েন সতর্ক করে দেন এই বলে যে, যুক্তরাষ্ট্র এই চলমান সংকটের জন্য জর্জিয়ান সরকারের মন্ত্রী এবং কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে প্রস্তুত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ