ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনও ধরনের বিদেশি সামরিক উপস্থিতি মানা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। শুক্রবার এক বিবৃতিতে হামাস এই ঘোষণা দেয়।
বিবৃতিতে হামাস জানায়, গাজা উপত্যকায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাণ করা অস্থায়ী জেটি ফিলিস্তিনি তদারকিতে সকল স্থল ক্রসিং খুলে দেওয়ার কোনও বিকল্প নয়।
সেই সঙ্গে দৃঢ়ভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যেকোনও বিদেশি সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাখ্যান করা হয় ওই বিবৃতিতে।
উল্লেখ্য, আরব লিগ বৃহস্পতিবার দাবি করে, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হোক। আর যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজায় বহুজাতিক আরব বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। এছাড়া গাজা উপকূলে মার্কিন বাহিনী একটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করেছে। তারা এখান দিয়ে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে এই বিবৃতি প্রকাশ করল হামাস।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্মিত জেটি দিয়ে ত্রাণের প্রথম চালান ঢুকেছে গাজায়। গাজা সীমান্ত পারাপারের ওপর ইসরায়েলের বিধিনিষেধ এবং প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে শুক্রবার ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো অবরুদ্ধ ছিটমহলে প্রবেশ করে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়েছে যে, জেটি প্রকল্পটি স্থল সরবরাহের বিকল্প নয়। স্থল সরবরাহের মাধ্যমে গাজায় প্রয়োজনীয় সমস্ত খাবার, পানি এবং জ্বালানি সরবরাহ হতে পারে। যুদ্ধের আগে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক ট্রাক বোঝাই করে পণ্য গাজায় প্রবেশ করতো।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড শুক্রবার এক বিবৃতিতে ত্রাণ তৎপরতার কথা স্বীকার করে বলেছে, সকাল ৯টায় প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী গাজায় প্রবেশ করে। এতে বলা হয়, ত্রাণ সরবরাহ অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সেনাসদস্য তীরে যায়নি।
বৃহস্পতিবার সেনাসদস্যরা ভাসমান জেটি বসানোর কাজ শেষ করেছে। কয়েক ঘণ্টা পরে পেন্টাগন জানায়, মানবিক সহায়তা শিগগিরই পাঠানো শুরু হবে এবং বিতরণ প্রক্রিয়ায় কোনও ব্যাকআপ আশা করা হচ্ছে না। এটি জাতিসংঘ সমন্বয় করছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং বলেন, ইসরায়েলিদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সব আলোচনায় জ্বালানি সরবরাহের বিষয়টি উঠে আসে। তিনি আরও বলেন, সমুদ্রপথ দিয়ে ধীরে ধীরে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে ট্রাক সরবরাহ বাড়ানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জেটি প্রকল্পের নির্দেশ দিয়েছেন। এর জন্য ব্যয় হবে ৩২ কোটি ডলার। নৌকাবোঝাই ত্রাণ গাজা সিটির দক্ষিণ-পশ্চিমে ইসরায়েলিদের নির্মিত একটি বন্দর স্থাপনায় জমা দেওয়া হবে এবং তারপর ত্রাণ সংস্থাগুলো তা বিতরণ করবে। সূত্র: আল-জাজিরা, মিডল ইস্ট আই, ভয়েস অব আমেরিকা