ইরান মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র বানাতে পারবে বলে জাতিসঙ্ঘ পরমাণু সংস্থার মহাপরিচালক মনে করেন।
জাতিসঙ্ঘ পরমাণু নজরদারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি অ্যাজেন্সির (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত সপ্তাহে ইরান সফর করেছিলেন। ইরানি পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে জাতিসঙ্ঘ নজরদারি জোরদার করাই ছিল তার উদ্দেশ্য।
ইরান তার পরমাণু স্থাপনাগুলোর তথ্য দিতে এবং পরমাণু স্থাপনাগুলোর ক্যামেরায় প্রবেশের সুযোগ দিতে রাজি হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে অনেক নজরদারি ক্যামেরা সরিয়ে ফেলা হয়েছে, অপ্রত্যাশিত স্থানে ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে।
ইরান সফরশেষে গ্রোসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইরান আগে কখনো পরমাণু বোমা তৈরীর এত কাছাকাছি আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে, বোমা বানাতে তাদের কয়েক মাস নয়, কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে, যদি সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি এর অনুমতি দেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পরমাণু চুক্তি বাতিল করেন। ওই চুক্তির আওতায় ইরান তার ইউরেনিয়াম মজুত সীতি করতে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ মাত্র ৩.৬৭ শতাংশ করতে রাজি হয়েছিল। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করতে ইউরেনিয়াম এই মাত্রা পর্যন্ত সমৃদ্ধ করতে হয়। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের অবরোধ থেকে রেহাই পাওয়ার কথা ছিল।
পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের ফলে ইরানের পরমাণু পরিকল্পনা বন্ধ হয়নি। বরং তেহরান এটিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগায়।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের প্রলিফারেশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার পলিসি প্রগ্রামের রিসার্চ ফেলো ডারিয়া দোলজিকোভা মিডিয়া লাইনকে বলেছেন, ইরান ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম বিশুদ্ধতা অর্জন করেছে, তারা এখন অস্ত্র বানানোর জন্য দরকার ৯০ ভাগ বিশুদ্ধতার দিকে যাচ্ছে।
তবে ইরানি সরকার বারবার বলে আসছে, পরমাণু অস্ত্র বানানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তবে খামেনির উপদেষ্টা কামাল খারাজি সম্প্রতি আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘জায়নবাদী জান্তা [ইসরাইল] যদি আমাদের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়, আমাদের অবস্থান বদলে যাবে। আমাদের পরমাণু অস্ত্র বানানোর সক্ষমতা আছে, আমরা ভবিষ্যতে নিজেদের রক্ষঅর জন্য এগুলো ব্যবহার করতে পারি।’
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট