প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরাইল গাজার উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রোববার রাফা এলাকার পশ্চিমে ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য ও জরুরি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের দাবি, এর ফলে জাতিসংঘ পরিচালিত শরণার্থীদের এক অস্থায়ী শিবিরে কমপক্ষে ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও আরো অনেক মানুষ আহত হয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দাবি, রাফা এলাকায় হামাসের সামরিক স্থাপনার উপর সুনির্দিষ্ট হামলা চালানো হয়েছে। সেই হামলায় পশ্চিম তীরে হামাসের ‘চিফ অফ স্টাফ’-সহ একাধিক হামাস কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের জের ধরে সেই এলাকায় নিরীহ মানুষের ক্ষতি হয়েছে বলে ইসরাইল স্বীকার করেছে। হামাসের কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রাফাহর হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন। সে দেশ ইসরাইলকে অস্ত্র ও আর্থিক সাহায্য দিয়ে এমন হামলায় মদত দিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের সূত্র অনুযায়ী রাফাহ এলাকায় তাদের অস্থায়ী হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালে অসংখ্য আহত মানুষদের আনা হয়েছে। ইসরাইলি হামলায় শরণার্থীদের তাঁবুতে আগুন লেগে মানুষের শরীর গলে যাচ্ছে বলে শিবিরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন। বেশ কয়েক মাসের বিরতির পর রোববার হামাস ইসরাইলের তেল আভিভ এলাকার দিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর সূত্র অনুযায়ী রাফাহ থেকে আটটি প্রোজেক্টাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি ধ্বংস করা হয়েছে। হামলার কারণে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায় নি। হামাসের আল-কাসেম ব্রিগেড টেলিগ্রাম চ্যানেলে নিরীহ মানুষের উপর হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরাইলের উপর রকেট হামলার কারণ তুলে ধরেছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, জাতিসংঘের আদালতের রায়ের আওতায় রাফাহ এলাকায় কিছু সামরিক অভিযান চালানোর বিধান রয়েছে। মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গানৎস বলেন, রোববারের রকেট হামলা প্রমাণ করে দিচ্ছে, যে ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে সেই সব জায়গায় অভিযান চালাতে হবে, যেখানে হামাস এখনো সক্রিয় রয়েছে।
এদিকে হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি পণবন্দিদের মুক্তি সংক্রান্ত আলোচনায় কিছু অগ্রগতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সংঘর্ষ বন্ধের বিনিময়ে প্রায় ১২০ জন পণবন্দির অর্ধেকের মুক্তির লক্ষ্যে ইসরাইল ও মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। হামাস অবশ্য এমন অগ্রগতির দাবি অস্বীকার করেছে।