গাজায় আবার যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশগ্রহণ প্রশ্নে শর্ত দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। রাফায় রোববার ইসরাইলের ‘হত্যাযজ্ঞের’ প্রেক্ষাপটে তারা এই তিনটি শর্ত দিয়েছে বলে জানা গেছে। এর একটি হলো রাফায় হামলা বন্ধ, রাফা ক্রসিং আগের প্রশাসকদের কাছে হস্তান্তর এবং ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার। এ তিনটি শর্ত মানা না হলে তারা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আর যোগ দেবে না বলে আন্তর্জঅতিক আলোচকদের জানিয়ে দিয়েছে।
রোববার রাফার পশ্চিমে একটি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু শিবিরের ওপর পরিচালিত ওই হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়। এছাড়া আহত হয় আরো অনেকে।
ওই বিমান হামলার জের ধরে অনেক নিরীহ ফিলিস্তিনি আগুনে পুড়ে মারা যায়। রাফায় হামলা বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) নির্দেশ দেয়ার দুই দিন পর এই হামলা চালায় ইসরাইল।
হামাসের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানান, তারা আলোচকদের জানিয়েছেন, রাফায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ, সৈন্য প্রত্যাহার, রাফা ক্রসিং না খোলা পর্যন্ত তারা আর আলোচনায় বসবে না।
তিনি বলেন, রাফা ক্রসিংকে অবশ্যই আগের প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে হবে। অন্য কাউকে এই ক্রসিংয়ে ফিরতে দেয়া হবে না। মাজিদ ফারাজ বা তার কর্তৃপক্ষকেও নয়। এই দাবি মানা না হলে তারা আলোচনায় যোগ দেবে না।
সূত্রটি জানায়, ভবিষ্যতের আলোচনা হতে হবে ‘এক পর্যায়ে’ এবং ‘এক দফায় প্রক্রিয়ার’ মাধ্যমে। সূত্রটি জানায়, আট মাসের নিষ্ফল আলোচনা এবং অব্যাহত হত্যাযজ্ঞের পর আর কোনো কিছু হতে পারে না।
তিনি বলেন, ইসরাইলকে অবশ্যই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে, রাফা ক্রসিং ত্যাগ করতে হবে, আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। তারপর আমরা আলোচনায় যাব। এসব না ঘটা পর্যন্ত কোনো আলোচনা হবে না।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের প্রথম দিকে হামাস প্রকাশ্যভাবে কাতার ও মিসরের মধ্যস্ততাকারীদের দেয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি গ্রহণ করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু ইসরাইল জানায়, তাদের দাবি মানা হয়নি।
ওই প্রস্তাবে ছয় সপ্তাহের করে তিন দফায় যুদ্ধবিরতি এবং সবশেষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল। এছাড়া গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার এবং অবরোধ প্রত্যাহারের আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল।
এতে গাজায় আটক ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তির এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির কথা ছিল।
উল্লেখ্য, সোমবার ওয়াশিংটনভিত্তি অ্যাক্সিয়স জানায় যে মোসাদ পরিচালক বেডিভ বার্নিয়া স্থবির হয়ে পড়া আলোচনা আবার শুরু করার জন্য একটি নতুন কাঠামোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। প্যারিসে শুক্রবার সিআইএ পরিচালক বিল বার্নস এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আস-সানির সাথে আলোচনার প্রেক্ষাপটে তিনি এই ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, নতুন কাঠামো কাতার ও মিসরের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে জীবিত বন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে কিছু নমনীয়তা রয়েছে। এছাড়া গাজায় স্থায়ী শান্ত পরিস্থিতির জন্য হামাসের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে হামাস বলেছে, তারা সাময়িক যুদ্ধবিরতি মানবে না। তারা স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করতে চায়।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই