• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

প্রধানমন্ত্রী দ্বীন শিক্ষার উন্নয়নে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন: শিক্ষামন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ২ জুন, ২০২৪

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে দ্বীন শিক্ষার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। যার মাধ্যমে আলেম-ওলামাদের শতবছরের দাবি বাস্তবায়ন করেছেন। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের সকল মাদরাসা প্রতিষ্ঠানের আলেমগণের সমন্বয়ে বর্তমান প্রযুক্তিগত জীবন ব্যবস্থায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ যেন বৈশ্বিক নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দ্বীনের প্রতি অনুগত প্রকাশ ও নবী (স.) এর সুন্নত পালন করতে পারে সে ক্ষেত্রে থিংকট্যাংক বা উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (০২ জুন) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অডিটোরিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বই পড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, মেধা বৃত্তি, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান এবং ফাজিল ও কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষগণের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে গবেষণার উপর জোর দিতে হবে। বর্তমান প্রযুক্তিগত শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে তালমিলিয়ে অগ্রসর হতে হলে মাদরাসা শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষক ও অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের গবেষণামূলক কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, কিছু ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও গোষ্ঠী দ্বীনকে ব্যবহার করে নিজেদের খারাপ স্বার্থ উদ্ধার করতে চায়। যাদের দ্বীনের জ্ঞান নেই তারাই সমালোচনা করে। দ্বীন শিক্ষাকে আলেমগণ যেভাবে পরিচালনা করছে পাঠ্যবইয়ে আমরা তা রিভিউ করছি। দ্বীন শিক্ষার সাথে যা সাংঘাতিক তা থেকে বিরত থাকতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী, স্বাক্ষরতা ও কর্মোপযোগী করে তোলা। কোন বিব্রত পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক সেটা আমাদের কাম্য নয়। আমাদের সবার উচিত শিক্ষার্থীদের দক্ষতা-মুখী ও দক্ষতা-নির্ভর করে তোলা।

রমজান মাসের ছুটি নিয়ে মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পক্ষের অনুরোধ রয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা জানি রমজান মাসে কোরআন শিক্ষা নেন অনেকে। অনেকে কোরআনের হাফেজ, তারা এ মাসে বেশি বেশি তেলাওয়াত করেন, নামাজ পড়ান। এজন্য ছুটি চান। আগামী রমজানের আগেই আমরা এটা নিয়ে একটা প্রস্তুতি নেবো। রমজানে যেন কোরআন শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটা আমাদের মাথায় রয়েছে।

আরবি ভাষায় যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানোর আহবান জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, অনেকেই আছেন আরবি ভাষায় অনেক দক্ষ। যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের দক্ষ হতে হবে। আমরা কোরআন প্রতিযোগিতা অবশ্যই করবো, আমি নিজেও শৈশবে কেরাত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতাম। আমার বাবা আমাকে মাখরাজ শিখিয়েছিলেন এবং কীভাবে উপস্থাপনা করতে হয়, সেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। কিন্তু আমি আরবিতে একটুও কথা বলতে পারবো না। এত সুন্দর করে মাখরাজ শেখার পর ভাষাটা রপ্ত করতে পারিনি।

মাদরাসা শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনাদের কাছে একটা আবেদন, আমরা যেন শিক্ষার্থীদের দক্ষতা-নির্ভর করতে পারি। কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় যেন থাকে। আমরা যা-ই পড়াচ্ছি, সেটা হোক ইংরেজি কিংবা আরবি, যে ভাষাটা শিখলো, তা দিয়ে শিক্ষার্থী যেন যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারে।

তিনি বলেন, অমুসলিম দেশেও কিন্তু আরবি ভাষা শেখানো হচ্ছে। সেটা আমাদের খেয়াল করতে হবে। বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু পাশাপাশি অন্যান্য ভাষার প্রতিও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজকে উপস্থিত বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, যারা অবসর নিয়েছেন, তাদের অনেকে দ্বীনি শিক্ষার জন্য কাজ করছেন। যার যার অবস্থান থেকে আমাদের দ্বীনি শিক্ষাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানে, আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ বলেন, মেধা-ভিত্তিক বৃত্তির পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদেরকেও বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থী বর্তমানে অধ্যয়নরত। ইতোমধ্যে দুই লাখ বায়ান্ন হাজার ছয়শত ঊননব্বই জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছে। যারা মূল সনদ পায়নি আমরা মূল সনদ দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। খুব শীঘ্রই সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল সনদ দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, কর্মকর্তা, ঢাকা মহানগরের ফাজিল ও কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ