ভারী বর্ষণ ও ভূমিধসের পর বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিম। বিশেষ করে লাগাতার বৃষ্টিতে ভূমিধসের জেরে উত্তর সিকিম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
দুর্যোগের কারণে রাজ্যটিতে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আটকা পড়েছেন অন্তত দেড় হাজার পর্যটক। এছাড়া পর্যটনের জন্য বিখ্যাত লাচুং, লাচেন-সহ বহু এলাকার সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর সিকিমের মাঙ্গান জেলায় অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক ভূমিধসে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং ১৫০০ পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন।
এছাড়া সাংকালাংয়ে একটি নবনির্মিত বেইলি ব্রিজ ধসে পড়ে মাঙ্গানের সাথে জংগু এবং চুংথাংয়ের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ভূমিধসের কারণে রাস্তার বিভিন্ন অংশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি প্লাবিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিদ্যুতের খুঁটিও ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
গুরুডংমার লেক এবং ইউনথাং উপত্যকার মতো জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোর জন্য পরিচিত মাঙ্গান জেলার জংগু, চুংথাং, লাচেন এবং লাচুং-এর মতো শহরগুলো এখন ভারতের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন।
মাঙ্গান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হেম কুমার ছেত্রি বলেন, ‘পাকশেপ এবং আম্বিথাং গ্রামে তিনজন করে মারা গেছেন।’ এছাড়া গেইথাং ও নামপাথাংয়ে বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য পাকশেপে ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে বলেও ছেত্রি জানিয়েছেন।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গত বুধবার রাত থেকে মাঙ্গান জেলায় এবং এর আশপাশে অবিরাম বৃষ্টিপাতের পরে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন এবং তাদের উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চালানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে উত্তর সিকিমে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঙ্গনে রেশনসহ এসডিআরএফ-এর দল পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত বছরের অক্টোবরে তিস্তা নদীতে ব্যাপক বন্যার পর সাংকালংয়ে ধসে পড়া বেইলি ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক সংযোগ প্রস্তুত না করা পর্যন্ত আটকে পড়া পর্যটকদের যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকতে বলা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।