লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় ইসরায়েলের এক সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। তিনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একটি ইউনিটের ডেপুটি কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন।
তিনি গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনেও অংশ নিয়েছিলেন। সম্প্রতি তাকে লেবানন সীমান্তে পাঠানো হয়। সেখানেই হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় প্রাণ হারান তিনি।
শুক্রবার (৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় একজন ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে। সিনহুয়া নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর হামলায় নিহত ওই কর্মকর্তার নাম ইতাই গালিয়া।
৩৮ বছর বয়সী এই কর্মকর্তা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৬৭৯ তম আর্মার্ড ব্রিগেডের ৮৬৭৯তম ইউনিটের ডেপুটি কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহর ব্যাপক হামলার সময় ইসরায়েল-অধিভুক্ত গোলান মালভূমিতে একটি রকেট আঘাত হানলে তিনি নিহত হন।
মূলত দক্ষিণ-পশ্চিম লেবাননের টায়ার শহরে সিনিয়র সামরিক নেতা মোহাম্মদ নামেহ নাসেরের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসেবে হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করেছে।
হিজবুল্লাহর সাথে সম্ভাব্য পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রস্তুতির অংশ হিসাবে ইতাই গালিয়াকে উত্তর ইসরায়েলে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে নিযুক্ত হওয়ার আগে তিনি গাজা উপত্যকায় আগ্রাসনে অংশ নিয়েছিলেন।
টানা প্রায় ৯ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। আর এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। মূলত গাজায় যুদ্ধের জেরে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় করছে হিজবুল্লাহ।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা তার মিত্র হামাসকে সমর্থন করতে এবং লেবাননে আক্রমণ চালানো থেকে ইসরায়েলকে নিবৃত্ত করতে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করছে।
লেবাননে গত আট মাসে আন্তঃসীমান্ত সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, লেবানন থেকে চালানো হামলায় সীমান্তে ১৮ সেনা ও ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। পাল্টাপাল্টি এই হামলায় উভয় পক্ষের কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গত কয়েক মাস ধরে হিজবুল্লাহর এসব হামলার তীব্রতা আরও বেড়েছে। হিজবুল্লাহ যেন সীমান্ত এলাকায় আর হামলা না চালাতে পারে সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের হুমকি দিয়ে আসছে ইসরায়েল। এ নিয়ে বর্তমানে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মূলত হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরায়েল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।