• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

 হামাস ও হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে বৈঠক

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪

গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে নিজেদের মিত্র-গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেছে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। গতকাল শুক্রবার লেবাননের কোনো এক অজ্ঞাত-স্থানে হয়েছে এই বৈঠক।

হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ এবং হামাসের রাজনৈতিক শাখার জ্যেষ্ঠ নেতা খলিল আল হায়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নিজেদের প্রস্তাব হামাস উপস্থাপন করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে লেবানন-ভিত্তিক শিয়াপন্থি সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় কমান্ড।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিভিন্ন পয়েন্ট নিয়ে মত বিনিময় করেছেন উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদল। ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শান্তি সংলাপ এবং গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে তাদের মধ্যে।”

গত ৭ আগস্ট সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। পাশাপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।

অতর্কিত সেই হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই ফিলিস্তিনিদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর এক মাস পর থেকে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও (আইডিএফ)। দিন যত গড়াচ্ছে, ততই তীব্র হয়ে উঠছে উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা।

এএফপির টালি বলছে, হিজবুল্লাহ ও আইডিএফের পাল্টাপাল্টি এই হামলায় গত ৭ মাসে লেবাননে নিহত হয়েছেন ৪৮১ জন। তাদের মধ্যে বেসামরিকদের সংখ্যা ৯৪ জন। অন্যদিকে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন সেনা এবং ১১ জন বেসামরিক।

সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাংগঠনিক উপপ্রধান শেখ নাঈম কাসেম। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করলে হিজবুল্লাহও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র-রকেট ছোড়া বন্ধ করবে।

“হামাসের মিত্র হিসেবে আমরা এখন থেকে (ইসরায়েলে) হামলা চালাচ্ছি। গাজায় যদি যুদ্ধবিরতি হয়, অর্থাৎ ইসরায়েলি বাহিনী যদি সেখানে অভিযান বন্ধ করে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে হামলা বন্ধ করে দেবো। আমাদের আর কোনো শর্ত নেই,”এপিকে বলেন শেখ নাঈম কাসেম।

গত ৭ অক্টোবর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসর। কাতারের মাধ্যমে গত মার্চ মাসে ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল হামাস।

সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এই জিম্মিদের ধরে এনেছিল গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী এই রাজনৈতিক গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা।

শুরুর দিকে অবশ্য হামাসের প্রস্তাবকে পাত্তা দিতে চাননি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছিলেন, গাজায় অভিযান-রত ইসরায়েলি বাহিনীর মূল লক্ষ্য হামাসকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা এবং এই প্রস্তাব সেই লক্ষের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তবে সম্প্রতি হামাসের সেই প্রস্তাব নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন নেতানিয়াহু। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে টেলিফোনে তিনি জানিয়েছেন, হামাসের প্রস্তাবের ভিত্তিতে শান্তি সংলাপ শুরু করতে শিগগিরই কাতারে ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে। সূত্র : এএফপি, দ্য ন্যাশনাল


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ