• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন

সকালে চা, কফি পান কি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

আপডেটঃ : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭

দিনের শুরুতেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় পড়লে আপনার দিনটা মাটি হয়ে যায়। সকালে সতেজতা অনুভবের জন্য আপনার পেট পরিস্কার হওয়া জরুরি। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাকে সহজ করার জন্য বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। যেমন-কেউ দিনের শুরুতেই ঘুম থেকে উঠে ১ গøাস পানি পান করেন অথবা ১ কাপ চা বা কফি পান করেন। পানি পান করা নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর একটি উপায়। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যকে সহজ করার জন্য চা বা কফি পান করার বিষয়টি কতটা যুক্তিগ্রাহ্য। এই পানীয়গুলো শুধু উদ্দীপক হিসাবেই কাজ করে না বরং মূত্রবর্ধক হিসাবে কাজ করার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাকে বৃদ্ধি করে দেয়। যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন তাঁদের জন্য অনেক বেশি চা বা কফি পান করা ক্ষতিকর। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হল, অনেক মানুষের সকালে পেট পরিস্কারের জন্য বা মল নির্গমনকে উৎসাহিত করার জন্য উদ্দীপকের প্রয়োজন হয়। অন্ত্রের গতিশীলতাকে উদ্দীপ্ত করার জন্য এক বা দুই কাপ কফি পান করা যায়, যদিও কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীদের জন্য এটি কার্যকরী নয়, কিন্তু তাঁর সারা দিনের জীবনযাপন পদ্ধতিও এই সমস্যার উপর প্রভাব ফেলে। যেহেতু, চা এবং কফি মূত্রবর্ধক হিসাবে কাজ করে তাই সারাদিনে কয়েকবার প্র¯্রাব হয়ে যাওয়ার ফলে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে, ফলে মল নির্গমন কঠিন হয়ে যায়। টয়লেটে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়েও অনেকের পেট পরিস্কার হয় না। কোষ্ঠকাঠিন্যের ভয়ে অনেকে নানা ধরনের খাবার খাওয়াই ছেড়ে দেন।

মাঝেমধ্যে নানা কারণে আপনার মল কঠিন হতেই পারে। তার মানে আপনি রোগে ভুগছেন, তা নয়। কিন্তু কেউ পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার মলত্যাগ করেন, তখনই একে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য অনেকে মল নরম করার বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, সিরাপ এবং মলদ্বারের ভেতরে দেওয়ার ওষুধ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকেন, যা মোটেও উচিত নয়। নিয়মিত এসব ওষুধ ব্যবহার করলে তা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। এ কারণে মলদ্বারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা আর থাকে না। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সঠিক কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ- শু আঁশযুক্ত খাবার এবং শাকসবজি কম খাওয়া। শু কম পানি খাওয়া। শু দুশ্চিন্তা। শু কায়িক পরিশ্রমের অভাব। শু অন্ত্রনালিতে ক্যানসার। শু ডায়াবেটিস। শু মস্তিস্কে টিউমার ও রক্ত ক্ষরণ। শু দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকা। শু বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ- শু শক্ত ও কঠিন মল। শু মলত্যাগে অনেক বেশি সময় লাগা। শু অনেক বেশি চাপের দরকার হওয়া। শু অধিক সময় ধরে মলত্যাগ করার পরও অসম্পূর্ণ মনে হওয়া। শু মলদ্বারের আশেপাশে ও তলপেটে ব্যথা।
আপনি যা করতে পারেন- যেহেতু আপনার জীবনযাপনের পদ্ধতি এবং ডায়েট কোষ্ঠকাঠিন্যের উপর প্রভাব ফেলে তাই এই সমস্যাটিকে সহজ করার জন্য করণীয় তা হল- খাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ করা- শর্করা সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রের গতিশীলতাকে পরিবর্তন করতে পারে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের পরিবর্তে ফল ও স্যালাড খেলে মলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় বলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাটি কমে। সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য মোকাবেলার সঠিক উপায়।
পর্যাপ্ত পানি পান করা- আমাদের মতো গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে যাঁরা বাস করেন তাঁদের দৈনিক ২-৩ লিটার পানি পান করা জরুরি হাইড্রেটেড থাকার জন্য এবং কোষ্ঠকাঠিন্যকে দূরে রাখার জন্য। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা উপায়-। বেশি করে শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খান। । বেশি করে পানি পান করুন। । দুশ্চিন্তা দূর করুন। । যাঁরা সারাদিন বসে কাজ করেন, তাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা।
চিকিৎসা না-করা হলে কিছু জটিল সমস্যা হতে পারে- । মল ধরে রাখার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। । পাইলস। । এনালফিশার। । মলদ্বার বাইরে বের হয়ে আসা। । মানসিকভাবে অশান্তি। । প্র¯্রাবের সমস্যা। । খাদ্যনালিতে প্যাঁচ লেগে পেট ফুলে যেতে পারে। । খাদ্যনালিতে আলসার বা ছিদ্র হয়ে যেতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ