প্রথমার্ধে খেলা তেমন জমে ওঠেনি। সবকিছু যেন জমা ছিল দ্বিতীয়ার্ধের জন্য। বিরতির পর বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই স্পেনের দাপট। এগিয়ে তো গেলই আবার ইংল্যান্ডও ঘুরে দাঁড়াল, যেমনটা তারা আসরজুড়ে করে এসেছে। কিন্তু এবার আর জয়ের গল্প লিখতে পারেনি। হারতেই হলো স্প্যানিশদের ছন্দময় ফুটবলের কাছে।
বার্লিন স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্পেন। যার ফলে জার্মানির মাটিতে জার্মানিকেই টপকে সর্বোচ্চ চারবার ইউরোর শিরোপা জিতল তারা। তাও ১২ বছর পর। তাই এখন তাদের ইউরোপের রাজা বলাই যায়।
যদিও ম্যাচের প্রথমার্ধে তেমন ধারালো ছিল না স্পেনের আক্রমণ। উইং ধরে আক্রমণের পরিকল্পনা করে এগোলেও বড় বিপদ তৈরি করতে পারেনি। বল দখলে অবশ্য এগিয়ে ছিল তারা। কিন্তু গোলমুখে যে দুটি শট নিয়েছে সেগুলো বলার মতো নয়। সেই তুলনায় ইংল্যান্ড পেয়েছে মাত্র একটি শটের দেখা।
যোগ করা সময়ে ফ্রি কিক থেকে ফিল ফোডেনের দুর্বল ভলি সহজেই ঠেকিয়ে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
বিরতির পর শুরুতেই ইংলিশদের মনে বড় ধাক্কা দেয় স্পেন। প্রথমার্ধে নিষ্প্রভ থাকা লামিন ইয়ামাল ইংলিশ রক্ষণকে ঠিকই পরাস্ত করতে সক্ষম হন। তার দারুণ অ্যাসিস্ট থেকে ৪৭ মিনিটে স্পেনকে এগিয়ে দেন নিকো উইলিয়ামস।
এরপর ব্যবধান বাড়ানোর কয়েকটি সুযোগ পায় স্প্যানিশরা। ৪৯ মিনিটে দানি অলমোর শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৫৫ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন অধিনায়ক আলভারো মোরাতা। কিন্তু ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।
স্পেনকে চড়াও হতে দেখে একাদশে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। সেমিফাইনালের মতো ৮০ মিনিটে অপেক্ষা করেননি। ৬০ মিনিটে মাঠ থেকে তুলে নেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। ৭০ মিনিটে কোবি মাইনুর জায়গায় মাঠে নামেন কোল পালমার। তিন মিনিটেরও কম সময়ের ভেতর ইংল্যান্ডকে সমতাসূচক গোল এনে দেন তিনি।
৭৩ মিনিটে বল পেয়ে ডান দিক দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠেন বুকায়ো সাকা। পাস দেন বক্সে থাকা জুড বেলিংহ্যামকে। তিনি অবশ্য প্রথম স্পর্শেই তা পাঠান কোল পালমারের কাছে। ২০ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত এক শটে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান এই ফরোয়ার্ড। এরপর অবশ্য কিছুটা ধুঁকছিল স্পেন। কিন্তু খুব বেশিক্ষণের জন্য নয়। দ্রুতই নিজেদের সামলে নিয়ে আদায় করে নেয় জয়সূচক গোল। আর সেটা আসে মিকেল ওয়ারসাবালের পা থেকে। ৮৬ মিনিটে মার্কো কুকুরেয়ার নিঁখুত পাসে কেবল টোকা মেরে ইংলিশ গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।
সেই টোকাতে আবারও উড়ে যায় ইংল্যান্ডের স্বপ্ন। ইউরোর ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো দল টানা দুই আসরে ফাইনাল খেলেও পায়নি শিরোপার স্বাদ। তাই নিজেদের অভাগা ভাবা ছাড়া আর কিছুই করার নেই বেলিংহ্যাম-কেইনদের।