ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ এবং দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে অভিযোগ এনে এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর দেড়টা থেকে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ করবে সংগঠনটি। সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে ছাত্রলীগ।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ডেকেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন।
সেখানে তিনি বলেন, আপনারা সারাদিন দেখেছেন কী হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে মর্মান্তিক দিন ছিল আজ। আজ পরিকল্পিতভাবে বহিরাগত-অছাত্র এনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের নারী শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। আমরা এখন পর্যন্ত খবর পেয়েছি, দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ২০-২৫ জনের অবস্থা ক্রিটিক্যাল (গুরুতর)।
নাহিদ বলেন, আজ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলাটি হয়েছে, তখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের নীরব ভূমিকা দেখেছি। আমরা এ প্রক্টর চাই না। আমরা প্রক্টরের কাছে জবাব চাই। তিনি কী করেন। তিনি থাকতে কী করে ক্যাম্পাসে অছাত্ররা, বহিরাগতরা এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এ হামলা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। আমরা গত কয়েকদিন ধরেই বলছিলাম, সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন পরিকল্পনা করছে আন্দোলনকে দমন করার জন্য, সহিংসভাবে এ আন্দোলনকে দমন করার জন্য। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সহিংসভাবে এ আন্দোলনকে দমন করা সম্ভব নয়।
নাহিদ আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অপমানসূচক বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে আজ আমাদের কর্মসূচি ছিল। আজ প্রেস ব্রিফিং থেকে বলতে চাই, আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করি, নিন্দা জানাই। আমরা আশা করেছিলাম, তিনি দেশে এসে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক পথ দেখাবেন। তা না করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতি যে কটূক্তি করেছেন, রাজাকারের নাতি বলে ইঙ্গিত করেছেন, তা নিন্দনীয়, এর জন্য তার প্রকাশ্যে ছাত্রসমাজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা উচিত।