কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশজুড়ে সৃষ্ট সংঘাত-সংঘর্ষ, কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের প্রেক্ষাপটে চলতি মাসে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে ডলারের বাজারে ফের অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিদেশে রেমিট্যান্সবিরোধী প্রচারণা শুরুর পর থেকে বাড়তে শুরু করেছে এই মুদ্রার দাম। এখন এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১২৪ থেকে ১২৪ টাকা ২০ পয়সা।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন মানিচেঞ্জার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, গত ২৮ জুলাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বেশি দামে রেমিট্যান্স আনতে মৌখিক নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর বেশি রেমিট্যান্স আহরণ করে এমন ১২টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) এ নির্দেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাই দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ১ থেকে ১৮ জুলাই এসেছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার; অর্থাৎ চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ হিসাব বলছে ১৯ থেকে ২৪ জুলাই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স আসা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। এর আগে ডলারের দাম বাড়ানোর পর গত মে মাসে ২২৫ কোটি ডলার এবং জুন মাসে ২৫৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে; একক মাস হিসেবে যা ৪৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে জুন মাসে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এই অস্থিরতা মূলত রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুতে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন উত্তপ্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত ডলারের দামে ১২০ টাকা মধ্যে ঘুরপাক খায়। তখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার দাম ছিল ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা। কোটাবিরোধী আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ের পৌঁছানোর পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে ১২১ এর মধ্যে ছিল। কিন্তু আজ ডলারের সেই দাম উঠে ১২৪ টাকায়।
গত ৮ মে ডলারের দর নির্ধারণের নতুন পদ্ধতি ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে প্রতি ডলারে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা ঘোষণা করা হয়। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ডলারের দর নির্ধারিত ছিল ১১০ টাকা। এর পর থেকে রেমিট্যান্স দ্রুত বাড়ছিল।