জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে বন্ধ করে দেয়া রাজধানীর ধানমন্ডি ও গুলশানের লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিতই থাকছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো.আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ আজ এই আদেশ দেয়। এর আগে গত ১৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে রবিবার ১৯ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য বিষয়টি পাঠানোর আদেশ দেয়। আজ আপিল বিভাগও স্থগিতাদেশ বহাল রাখে বলে সূত্র জানায়।
আদালত সূত্র জানায়, আরো ১০ দিনের জন্য হাইকোর্ট আদেশ স্থগিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল দাখিল করতে বলেছে আপলি বিভাগ।
গত ১৪ নভেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে স্কুলটির দুই শাখা খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
হাইকোর্ট আদেশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই স্কুলের ধানমন্ডি ও গুলশানের শাখা খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি লেকহেড স্কুল কর্তৃপক্ষকে জঙ্গিবাদসহ যেকোনো বিষয়ে সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয়।
স্কুল খুলে দিতে আনা রিট আবেদনের পক্ষে হাইকোর্টে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও রাশনা ইমাম।
এর আগে ৯ নভেম্বর লেকহেড গ্রামার স্কুলের গুলশান ও ধানমন্ডি শাখা বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভুত ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। বন্ধ করে দেয়া লেকহেড স্কুলের মালিককে স্কুলটি খোলা ও পরিচালনা করতে দেয়ার জন্য কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না- রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। স্কুলটির মালিক খালেদ হাসান মতিন ও ১২ শিক্ষার্থীর অভিভাবক হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
গত ৬ নভেম্বর ধানমন্ডি ও গুলশানের দুটি শাখাসহ লেকহেড স্কুলের সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সালমা জাহানের সই করা চিঠিতে ঢাকা জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের অনুমোদন নেয়নি। এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধর্মীয় উগ্রবাদ, উগ্রবাদী সংগঠন সৃষ্টি, জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতাসহ স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কর্মকান্ডে যুক্ত বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এই প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্যোক্তা ও পৃষ্ঠপোষক রেজোয়ান হারুনের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন ও মদদের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে রেজোয়ান হারুনকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
২০০৬ সালে ধানমন্ডির ৬/এ সড়কে প্রতিষ্ঠিত হয় লেকহেড গ্রামার স্কুল। গুলশানে এই স্কুলের আরো দুটি শাখা আছে।