ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা দশ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১৬ হাজার ৪০০ জনের বেশি। এমন তথ্যই জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৬ হাজার ৪৮০ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার জানিয়েছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল থাওয়াবতেহ আনাদোলুকে বলেছেন, ‘নিহতদের মধ্যে ১১৫টি বাচ্চাও রয়েছে।’
তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের মধ্যে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় ৩৫ ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘গাজায় খাদ্য সরবরাহে ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্যের অভাব এবং অপুষ্টির মধ্যে গাজায় অন্তত ৩৫০০ শিশু মৃত্যুর ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে।’
থাওয়াবতেহ বলেন, ‘গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ১৭ হাজারেরও বেশি শিশু তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে বা তাদের মধ্যে অন্তত একজনকে হারিয়েছে।’
এছাড়া গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক আক্রমণের কারণে ফিলিস্তিনি শিশুদের ওপর নেতিবাচক মানসিক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে চলেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ইসরায়েলি হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আরও ৯২ হাজার ৭৪৩ জন মানুষ আহত হয়েছেন।