মিশন ছিল মাত্র আট দিনের, কিন্তু তারা ৮০ দিনেও ফিরে আসতে পারেননি
ইন্দো-আমেরিকান মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস এবং তার সঙ্গী বুচ উইলমোরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) আটকে পড়েছেন। নাসা এবং বোয়িং তাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
কিন্তু স্টারলাইনার মহাকাশযানের সমস্যার কারণে তাদের পৃথিবীতে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো কি তাদের সাহায্য করতে পারবে? এরই স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন ইসরো প্রধান।
এ বছরের ৫ই জুন নাসার মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে বোয়িং-এর স্টারলাইনারে চড়ে মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন।
৬ জুন তারা দুজনেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছান। এই মিশন ছিল মাত্র আট দিনের। কিন্তু তারা দুজনই আজ পর্যন্ত মহাকাশে আটকে আছেন।
স্টারলাইনারে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই তাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। নাসা এবং বোয়িংয়ের বিজ্ঞানীরা তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেনি।
সুনিতা উইলিয়ামস ইন্দো-আমেরিকান মহাকাশচারী।
দীর্ঘতম স্পেসওয়াকের রেকর্ডও রয়েছে তার দখলে। নাসা এবং বোয়িং এর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে, ভারত কী কোনো ভাবে সুনিতা উইলিয়ামসকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে পারবে?
সম্প্রতি, ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) প্রধান এস সোমনাথকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, সুনিতা উইলিয়ামসকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে ভারত সরাসরি কোনোভাবেই সাহায্য করতে পারে না। দুই মহাকাশচারীকে ফিরিয়ে আনতে পারে একমাত্র আমেরিকা বা রাশিয়া।
ইসরো গত কয়েক দশকে মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। চন্দ্রযান এবং মঙ্গলযানের মতো সফল অভিযান ভারতকে মহাকাশে অভিযানের তালিকায় প্রথম দিকে স্থান দিয়েছে । এমন পরিস্থিতিতে, যখন সুনিতা উইলিয়ামস এবং তার সঙ্গী বুচ উইলমোর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) আটকে পড়েছেন, তখন কেন ইসরো তাদের সাহায্য করতে পারছে না?
ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানান, আমাদের কাছে এমন কোনও মহাকাশযান নেই যা সেখানে গিয়ে তাদের বাঁচাতে পারে। এটা সম্ভব নয়। এটা একমাত্র আমেরিকা বা রাশিয়া করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন মহাকাশযান রয়েছে এবং রাশিয়ার কাছে সয়ুজ নভোযান রয়েছে যা উইলিয়ামস এবং উইলমোরকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে। এমন নয় যে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা ভারতের নেই। এই বছরের শেষে ইসরো মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পরীক্ষা পরিচালনা করবে।
ভারতের মানব মহাকাশ মিশন কর্মসূচির নাম ‘গগনযান’। চলতি বছরের ডিসেম্বরে এর পরীক্ষা শুরু হতে পারে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর ইসরো তার মহাকাশচারীদের মহাকাশে পাঠাবে, এই মিশনটির নাম এ-২।
ইসরো জানিয়েছে, সুনিতা উইলিয়ামসের পরিস্থিতি গগনযান মিশনের জন্য একটি শিক্ষা হবে গগনযান মিশনের জন্য অপ্রত্যাশিত প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য প্রস্তুত থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
এই মিশনটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটি প্রথম প্রচেষ্টাতেই সফল হয়। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) বলেছে যে আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসা মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয়েছে তা দেশের গগনযান মিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ।
উইলিয়ামস এবং আরেক মহাকাশচারী বুচ উইলমোর দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে মহাকাশে আটকে আছেন। সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।