ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে ব্যস্ত সময়ে চালানো এই হামলায় মধ্য কিয়েভে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়।
অবশ্য ভোরে দুই দফা ড্রোন হামলার পরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছিল ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এদিকে কিয়েভের বিমান বাহিনী ইউক্রেনীয়দের জানিয়েছে, রাশিয়ার ১১ টিইউ-৯৫ কৌশলগত বোমারু বিমান আকাশে রয়েছে এবং বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টিও তারা নিশ্চিত করেছে। ইউক্রেনের রাজধানীর বাইরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে সক্রিয় করা আকাশ প্রতিরক্ষার শব্দও শুনতে পান রয়টার্সের সাংবাদিকরা।
রয়টার্স বলছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লুটস্কে বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে এবং বলেছে, বিস্ফোরণে সেখানকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তারা সম্ভাব্য হতাহতের বিষয়টি যাচাই করছে।
পোলিশ সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেছে, রাশিয়া আক্রমণ শুরু করার পরে পোলিশ এবং সহযোগী বিমানগুলো সক্রিয় করা হয়েছিল। মূলত ইউক্রেনের পশ্চিমে এবং পোলিশ সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলগুলোকে লক্ষ্য করেও এদিন হামলা চালায় রাশিয়া।
ইউক্রেনীয়রা বেশ কিছুদিন ধরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কা করছিল। ইউক্রেনীয় দূতাবাস গত সপ্তাহে ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসের আগেপরে হামলার উচ্চ ঝুঁকির বিষয়ে একটি সতর্কতাও জারি করেছিল। মূলত গত শনিবারই ইউক্রেন এই দিবসটি পালন করেছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনও সম্প্রতি রাশিয়ায় আঘাত হানার জন্য দূরপাল্লার ড্রোন হামলা বাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে ইউক্রেন মূলত মস্কোতে পাল্টা আঘাত করার চেষ্টা করছে।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক দৃশ্যত প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘আমাদের শক্তি ধ্বংস করার আকাঙ্ক্ষার জন্য রাশিয়ানদের চড়া মূল্য দিতে হবে: তাদের অবকাঠামোকেও।’
এদিকে রাশিয়া সোমবার ভোরে দুই দফায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে। তবে সেই হামলার ঘটনার প্রাথমিক তথ্যে কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এছাড়া কিয়েভের আশপাশের অঞ্চলে গভীর রাতে শহরের দিকে ধেয়ে আসা ১০টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সের্হি পপকো টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে বলেছেন।
অবশ্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা করার কথা অস্বীকার করেছে। উভয় দেশই বলছে, তাদের আক্রমণের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিপক্ষের যুদ্ধ প্রচেষ্টার অবকাঠামো ধ্বংস করা।