মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে এবার মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশকে শোকজ করলো বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট (বিএফআইইউ)। এছাড়া হুন্ডির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে এমন এজেন্টদের হিসাব স্থায়ীভাবে বন্ধ করার কর্মপরিকল্পনা পেশের জন্য নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, একজন গ্রাহকের একটিমাত্র ব্যক্তিগত হিসাব পরিচালনা সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লংঘন করে বিপুল পরিমাণ হিসাব পরিচালনা করেছে বিকাশে অনেক গ্রাহক। এছাড়া এসব হিসাব হুন্ডিসহ অবৈধভাবে বেনামী গ্রাহকদের লেনদেন সুবিধা প্রদানে ব্যবহূত হওয়ার নজির পাওয়া গেছে। তাই, এজেন্টদের পরিচালিত একাধিক ব্যক্তিগত হিসাবের মধ্যে একটি সচল রেখে সংশ্লিষ্ট এজেন্টদের অন্যান্য হিসাব বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো কিছু হিসাবধারীর হুন্ডির সঙ্গে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসকল হিসাবের তথ্য সিআইডির কাছে পাঠানো হয়েছে।
হুন্ডিতে জড়িত থাকার অপরাধে এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে বিকাশের ২ হাজার ৮৮৭ টি এজেন্টের কার্যক্রম স্থগিত (বন্ধ) করতে নির্দেশ দিয়েছিল বিএফআইইউ। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্দেহভাজন কোনো লেনদেন পাওয়া গেলে বিএফআইইউকে অবহিত করার কথা বলা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, হুন্ডি প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। গত সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহের নিম্নমুখী প্রবণতা বন্ধ হয়েছে। এখন তা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। গত অক্টোবরে ১১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের মাসের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। চলতি নভেম্বর মাসেও রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
বিকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে হুন্ডি কমবে বলে মনে করছে বিএফআইইউ। তারা বলছে, হুন্ডি কমলে রেমিট্যান্স প্রবাহের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। বেনামে ছদ্মনামে বা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে পরিচালিত এজেন্টদের একাধিক হিসাব বন্ধ হলে এমএফএস খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হবে।
অপব্যবহারের মাধ্যমে অপহরণ জঙ্গি অর্থায়ন ও অন্যান্য অপরাধ কমবে। আর মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সময় গ্রাহকদের নিজের হিসাব ব্যবহারের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে গ্রাহক ও এজেন্টদের সচেতনতা বাড়বে। গ্রাহকদের নিজের হিসাব ব্যবহারের প্রবণতা বাড়লে এ হিসাবের মাধ্যমে সঞ্চয়, ক্ষুদ্র ঋণসহ অন্যান্য সেবা তথা আর্থিক অন্তর্ভুক্ত বাড়বে।