• রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

ক্যাপ্টেন রাজিবকে বিডিআর হত্যার তথ্য জেনে যাওয়ায় খুন করা হয়

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিডিআর বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে কোনো তথ্য জেনে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় ক্যাপ্টেন রাজিবুল হক হিমেলকে। যাতে করে তিনি ওইসব তথ্য অন্য কোথাও প্রকাশ করতে না পারেন। হত্যার পর মিডিয়াগুলোতে রাজিব ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলতে চাপ দেয়া হয় পরিবারের সদস্যদের।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন সেনা বাহিনীর ক্যাপ্টেন রাজিবুল হকের (হিমেল) পরিবার। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের মামা প্রফেসর মো: শফিকুল ইসলাম।

উপস্থিত ছিলেন- আরেক মামা রোকনুজ্জামান, খালা ফেরদৌসি পারভীন প্রমুখ। দেশের বাইরে থাকায় নিহতের মা ও ছোট বোন উপস্থিত থাকতে পারেননি।

শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্যাপ্টেন রাজিব বিএ ৬৯৫৭, ব্যাচ-৫১ (আরমার কোর) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন। তার পোস্টিং ছিল বগুড়ায়। ২০০৮ সালের অক্টোবরের দিকে রাজিব তার মাকে জানান, ‘একটি বিষয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে সেটি খুবই গোপনীয় বিষয়। এতে তার বিপদ হতে পারে। তাই তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশত্যাগ করতে হবে। তবে ওই বিপদটি কী তা বলেননি রাজিব। এর ৬ মাস পর ২০০৯ -এর ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় মর্মান্তিক বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটে।

তিনি বলেন, তার কিছুদিন পর ৭ মার্চ রাজিব ঢাকার বাসা থেকে তার কর্মস্থল বগুড়ায় যেতে রওনা হন। এরমধ্যে একটি ফোন এলে তিনি দ্রুত হোটেল রাজমনি ঈশা খা’য় চলে যান। সেখানে তাকে নির্মমভাবে অত্যাচার করে হত্যা করা হয়। তার চেহারা বিকৃত করে ফেলা হয়। গলা, হাত ও পায়ের রগ কেটে মুখ থেতলে দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজিবের মোবাইল দিয়ে তার মাকে ফোন করা হয়। ফোন রিসিভ করলে অপরপ্রান্ত থেকে রাজিবের আম্মু, আম্মু চিৎকার শোনেন তার মা ও ছোট বোন। পাশ থেকে কয়েকজনের আওয়াজ আসছিল ‘বল বল’ শব্দে। সন্তানের এমন কান্না শুনে ভেঙে পড়েন রাজিবের মা ও বোন।

শরিফুল বলেন, খবর পেয়ে তিনি হোটেলের লবির পাশে কার্নিশে পড়ে থাকা রাজিবকে শনাক্ত করেন। তখন একজন ক্যাপ্টেন ও একজন মেজর পরিচয়দানকারী তাকে বলেন, ‘একটি মেয়ের কারণে রাজিব আত্মহত্যা করেছেন। মিডিয়ার কাছে আপনি এই কথা বলবেন’। বারবার তারা একই কথা বলতে বলেছিলেন।

তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির দু’জন রাজিবের মায়ের কাছে বলেন, ‘রাজিব আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।

শরিফুল আরো বলেন, ‘সম্প্রতি রাজিবের একজন সহকর্মী এক সাংবাদিককে দেয়া স্বাক্ষাৎকারে বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জেনে যান রাজিব। সেই তথ্য তার কয়েকজন সহকর্মীর কাছে ই-মেইলে শেয়ার করেন। যার কারণে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে’।

শরিফুল বলেন, বিডিআর ও রাজিব হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাথা। যারা পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলেন তারাই রাজিবকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। বর্তমান সরকারের কাছে আমরা ক্যাপ্টেন রাজিব হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ