ইরানের দীর্ঘ দিনের বন্ধু ভারত। সেই বন্ধুত্বে কি এবার দাড়ি পড়তে চলেছে? সম্প্রতি ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেই-এর এক সোশাল মিডিয়া পোস্ট সেই জল্পনাই আরও বাড়িয়ে দিল। ভারতে মুসলিমদের উপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে সমালোচনা করলেন খামেনেই। তার এমন দাবির পালটা জবাব দিয়েছে ভারতও। কার্যত বার্তা দেয়া হল, আগে নিজের ঘর সামলান, পরে অন্যকে জ্ঞান দেবেন।
সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় এক বার্তা দেন ইরানের নেতা খামেনেই। যেখানে ভারতকে তিনি সেই তালিকাভুক্ত করেন যেখানে মুসলিমদের উপর নৃশংসতা চালানো হচ্ছে। এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ভারত, গাজা এবং মিয়ানমার-সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এই চরম পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা যদি তাদের দুর্দশা সম্পর্কে উদাসীন থাকি, তবে আমরা নিজেদের মুসলিম হিসাবে দাবি করতে পারি না।’ সাম্প্রতিক পরিস্থিতির মাঝে খামেনেই-এর এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই জলঘোলা হতে শুরু করেছে। এই মন্তব্য দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
হঠাৎ খামেনেই-এর এমন মন্তব্যের পিছনে কূটনৈতিক মহলের দাবি, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে ইরান সরাসরি ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিলেও, ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। যা একেবারেই মনপুত হয়নি ইরানের। পাশাপাশি ইসরাইলের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও ভালো চোখে দেখছে না তেহরান। এই যুদ্ধে ইউরোপিয় দেশগুলির বিরুদ্ধে যেভাবে ইরান রুখে দাঁড়িয়েছে সেখানেই ‘বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত ভারতের আমেরিকা ঘনিষ্ঠতাও সন্দেহ জাগিয়েছে ইরানের মনে। এই সব কিছুর মাঝেই ইরানে সুপ্রিম লিডারের এমন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
এদিকে ইরানের মন্তব্যের পালটা জবাব দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সোশাল মিডিয়ায় পালটা লেখেন, ‘ভারতে সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। এগুলো অসত্য তথ্য কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ একইসঙ্গে বার্তা দেন, ভারতের সংখ্যালঘুদের নিয়ে মন্তব্য করার আগে নিজেদের অতীত খতিয়ে দেখুন।’