দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফরিদপুর জেলা। এর মধ্যে ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলায় উৎপাদন হয় বেশি। এ বছর সালথা, নগরকান্দাসহ জেলায় পেঁয়াজের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিনযাপন করছেন চাষিরা। নতুন পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হলেও ন্যায্যমূল্যে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
পেঁয়াজ উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ না উঠলে আগামী বছর পেঁয়াজ আবাদে আগ্রহ হারাবে কৃষক। এমন দাবি করেছেন কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরে চাষিরা পেঁয়াজের মূল্য ভালো পাওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি (১২ হাজার হেক্টর) জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করে। উপজেলায় দুই লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকের ১ হাজার ১’শ থেকে ১ হাজার ২’শ টাকা খরচ হয়। আর বর্গা চাষিদের খরচ বেড়ে দেড়গুণ হয়। এতে বর্গা চাষিদের প্রতিমণ পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ হয় ১ হাজার ৭’শ থেকে ১ হাজার ৮’শ টাকা। কমপক্ষে প্রতিমণ পেয়াজ ১ হাজার ৮’শ টাকার কম হলে বিপাকে পড়বেন বলে জানায় চাষিরা।
পেঁয়াজ চাষিরা জানান, পেঁয়াজ চাষে বিঘাপ্রতি খরচ ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। দেশি পেঁয়াজ ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ মণ ফলন হয়। আর বর্তমান বাজারে পেঁয়াজ প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা। পেঁয়াজ উৎপাদন খরচের চেয়েও বাজারে কম মূল্যে পাচ্ছে কৃষকরা। প্রতিমণ পেঁয়াজের মূল্যে ২ হাজার টাকা হলে কৃষকরা কিছুটা লাভবান হতো।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন সিকদার জানান, এবছর পেঁয়াজের বীজের দাম বেশি থাকায় এবং অধিক সেচের প্রয়োজন হওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজস্ব জমিতে উৎপাদন ব্যয় মণপ্রতি ৯০০ টাকার কাছাকাছি এবং বর্গা জমিতে ১ হাজার ৩’শ টাকার কাছাকাছি। মৌসুমের শুরুতে দাম কম থাকলেও আশা করা যায় পরবর্তীতে দাম বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট হতে ন্যায্যমূল্য পেঁয়াজ ক্রয়ের উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশাবাদী।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. শাহাদুজ্জামান বলেন, এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন বেশ ভালো হয়েছে। তাই মৌসুমের শুরুর দিকে দাম কিছুটা কম থাকলেও কিছুদিন পর দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
