• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন

চন্দ্রাবিট অফিসারের বিদায়ের মূহুর্তে বনের জমি দখলের হিড়িক

আপডেটঃ : রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি॥
গাজীপুরের কালিয়াকৈর চন্দ্রাবিটের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় বনের জমি দখল করে বাড়ীঘর নির্মানের হিড়িক পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে চন্দ্রাবিট অফিসারে বিদায়ের মূহুর্তে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে জনা যায়, চন্দ্রাবিটের বিশ^াস পাড়া,পশ্চিম চান্দরা,হরতকিতলা,রংপুরের টেকসহ বিভিন্ন এলাকায় বিট অফিসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে স্থানীয় বিট অফিসের দালালদের মাধ্যমে নির্মান করা হচ্ছে এসব বাড়ীঘর।টিন দিয়ে দেয়াল তৈরি করে গজারি গাছসহ দখল করে নিচ্ছে বনের জমি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশ^াস পাড়া এলাকায় আল-আমিন নামের ফ্লেক্সিলোডের এক দোকানদার দীর্ঘদিন ধরে বনের জমিতে সপরিবারে বসবাস করলেও থামেনি তার বনের জমি দখলের নেশা।গত এক মাসে বিট অফিসারের বদলী কথা শুনে ঘর নির্মান করতে ব্যস্ত হয়ে যায় আল-আমিন।এর মধ্যেই আলআমিন বনের জমি দখল করে নির্মান করেছে নয় রোমের কলোনি।ওই এলাকায় আজিজ ও মুকুল নামের দুই ব্যক্তি টিনের বেড়াদিয়ে প্রায় সত্তুর শতাংশ বনের জমি দখল করে নিয়েছেন।এাড়াও ওই বিশ^াস পাড়া এলাকায় কাবেরী ম্যাডাম নামে একজন মাদ্রাসার নামে বনের জমি দখল করে পাকা ঘর নির্মান করে এখন সেখানে দোকান ও আবাসিক বসতি গড়ে তুলেছে।বিশ^াস পাড়ার রাজীব কলোনী নির্মানের আগেই বনের জমি দখল করে নির্মান করছে বিশাল আকৃতির সেফটি ট্যাংকি।এ ছাড়াও চন্দ্রাবিটের পশ্চিম চান্দরা কারিকর পাড়া এলাকায় নবু সরদার নামের এক লোক দীর্ঘদিন যাবত বনের জমি দখল করে বিশাল বাড়ী নির্মান করে বসবাস করলেও পূনরায় গত এক মাসে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে বিট অফিসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিশাল আকৃতির দুইটি ঘর নির্মান করেছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন দালাল জানান,বিট অফিসার আমাদের কাছ থেকে এসব ঘর নির্মানের জন্য আগেই টাকা নিয়েছিল।বিট অফিসার চলে যাবে বিধায় এসব ঘর করার জন্য অনুমতি দিয়েছে।
অপরদিকে উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের মৌচাক ও রাখালিয়াচালা এলাকায় নতুন কৌশলে প্রায় পাঁচ একর বনের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মৌচাক গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ও আবু হানিফ নামের আপন দুই ভাই। দীর্ঘদিন ধরে রাখালিয়াচালা বনের জমির খেলার মাঠের পূর্বপাশে আয়েশা ইসলামিক স্কুল নামের একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুল গড়ে তোলেন বনের জমি দখর করে। সে একটি সেমি পাকা ও দুইটি টিন শেড ঘর তৈরি করে বনের প্রায় এক একর জমি দখল করে নেয়।
অপরদিকে আবু হানিফের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বনের জমিতে দুইটি মাদ্রাসার নামে আরো তিন একর বনের জমি দখল করে নেয়। মৌচাক উত্তরপাড়া বন বীটের অফিসের পশ্চিম পাশে পশ্চিম মৌচাক ইসলামিয়া নুরানী হিফজুল কোরআন ও আলিয়া বিভাগ নামের একটি মাদ্রাসা তৈরি করেন বনের জমিতে। ওই সময় বনের প্রায় দুই একর ওই মাদ্রাসার দখলে রেখে সরকারী গজারী গাছ কেটে মাঠ ও টিন শেড তৈরি করে দখল করে নেয়।
সর্বশেষ মৌচাক উত্তর পাড়া এলাকায় গভীর বনের ভিতর মৌচাক হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম দাখিল মাদ্রাসা গড়ে তুলেন। সেখানে দিন দিন সরকারী বনের গজারী গাছ কেটে টিন শেড ঘর তৈরি করে দখল করে নিতেছে বনের জমি।
এ ব্যাপারে আয়শা ইসলামিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আবু হানিফ জানান, আমি সরকারী বনের জমিতে স্কুল গড়ে তুললেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কম মাইনে নিয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের পড়াই।
তার ভাই হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি একটি কাজে ব্যস্ত আছি পরে আপনাদের সাথে কথা বলবো।
মৌচাক বীট কর্মকর্তা সজিব কুমার মজুমদার জানান, দখলকারীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বনের জমি দখল করেছে। এদের উচ্ছেদের জন্য আমাদের উপরের কর্মকর্তাদের জানানো হচ্ছে।
কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন দেওয়া হয়েছে, বনের জমি জবর দখলকারীদের উচ্ছেদ করার জন্য। শিঘ্রই ওই সব জবর দখলকারীদের উচ্ছেদের জন্য অভিযান চালানো হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ