ভারতের উত্তর সিকিমে অতিভারী বর্ষণে তিস্তা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। সেখানকার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ড্যাম (বাঁধ) ভেঙে গিয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জলপাইগুড়িতে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। ফলে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গেও তিস্তাপাড়ে বড় আকারের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাংয়ের ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে নদীর পানির সমতল দ্রুত বেড়েছে।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী গজলডোবা পয়েন্টে পানির সমতল বিগত মধ্যরাতে প্রায় ২৮৫ সেন্টিমিটার বেড়েছে (বর্তমান পানির সমতল ১১০ দশমিক ৩০ মিটার) এবং দোমুহনী পয়েন্টে সকালে প্রায় ৮২ সেন্টিমিটার বেড়েছে (বর্তমান পানির সমতল ৮৫ দশমিক ৯৫ মি.) এবং এই বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
তিস্তা নদীর পানি সমতল ডালিয়া পয়েন্টে কমেছে। আজ সকাল ৯টার তথ্যানুযায়ী ডালিয়া পয়েন্টের পানি সমতল ৫১ দশমিক ৩৫ মিটার (বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচে), যা আজ থেকে বাড়তে পারে এবং আজ বিকেল নাগাদ বিপৎসীমা অতিক্রম করে মধ্যরাত পর্যন্ত বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর পর্যন্ত যেতে পারে।
বুধবার সকাল ৯টার তথ্যানুযায়ী তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টের পানি সমতল ২৮ দশমিক ১৫ মিটার (বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার নিচে) যা বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ভোর নাগাদ বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ভারতের সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরেক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী শনিবার (৭ অক্টোবর) নাগাদ দেশের উত্তরাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, পুনর্ভবা, কুলিখ টাঙ্গন, ইছামতি যমুনা ও যমুনেশ্বরী নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে।
এই সময়ে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মহানন্দা, ছোট যমুনা, করতোয়া, আত্রাই ও গুর নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে।
ভারতের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, কালিম্পংয়ে ১০ নম্বরের জাতীয় সড়ক ভেসে গেছে। সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ধসের কারণ বাংলা-সিকিমের যোগযোগ বন্ধ রয়েছে। ড্যাম ভেঙে যাওয়ায় তিস্তার পানিতে সিকিমে বন্যা পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। বন্যায় ভেসে গেছে ভারতীয় ২৩ সেনা।