কাগজ বা কাপড়ের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই এবং সস্তা প্লাস্টিক। নিয়মিত প্লাস্টিক পদার্থের ব্যবহার দূষণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিকের বোতল, কসমেটিকের প্লাস্টিক, গৃহস্থালির প্লাস্টিক কিংবা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বেশিরভাগের পুনঃচক্রায়ন হয় না। প্লাস্টিক এমন এক রাসায়নিক পদার্থ যা পরিবেশে পচতে কিংবা কারখানায় পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ করতে অনেক সময় লাগে। তাই একে ‘অপচ্য পদার্থ’ হিসেবে আখ্যা দেয়া যায়। এগুলো পরিবেশে বর্জ্য আকারে জমা হতে থাকে।
হিসেব মতে, পরিবেশ থেকে মাত্র ৯ শতাংশ প্লাস্টিক পুনঃচক্রায়ন করা সম্ভব হয়। কিন্তু প্লাস্টিকের পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ করার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী এক পরিবর্তন আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন কানাডার তরুণ বিজ্ঞানী মিরান্ডা ওয়াঙ। মিরান্ডা এবং তার প্রতিষ্ঠান বায়োকালেকশন প্লাস্টিক দূষণের চিত্র বদলে দিতে চান। তারা এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করার কথা বলছেন, যে প্রক্রিয়ায় পরিবেশে বর্জ্য আকারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিককে অতি সহজে পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ করা যাবে।
পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে প্লাস্টিক। সাধারণত উদ্ভিদকুল, জলজ প্রাণী, দ্বীপ অঞ্চলের প্রাণীরা প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য ঐসকল প্রাণীর বাসস্থান, খাদ্য সংগ্রহের স্থান ও উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণের পথে বাধার সৃষ্টি করে। প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে প্রতিবছর মৃত্যু হয় লাখো পাখির। শুধু উদ্ভিদ বা জলজ প্রাণী নয়ই, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষও।
থাইরয়েডের হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষভাবে দায়ী। প্লাস্টিকের এক সমস্যার কথা জেনেও কিন্তু আমরা প্লাস্টিক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে পারি না। প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে নানা সময়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেও পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয় এর ব্যবহার। তাই এখন প্রাধান্য পাচ্ছে প্লাস্টিকের পুনঃপ্রক্রিয়াকরণকে কত বেশি কার্যকর করা সম্ভব।