খুলনা মহানগরীর আবাসিক হোটেলগুলোতে আড়ালে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। এসব অনৈতিক অসামাজিক কাজগুলো বন্ধ করতে কঠোর অবস্থানে নেমেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গেল ২৪ ঘন্টায় নগরীর বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেলে অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে অনৈতিক কাজ করার অপরাধে ১২ জন নারী-পুরুষ গ্রেপ্তার করেছে ডিবি ও সংশ্লিষ্ট সদর থানা পুলিশ। যার মধ্যে গেল শুক্রবার রাতে নগরীর হোটেল গোল্ডেন স্টার ইন্টারন্যাশনাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া নগরীর ডাকবাংলো মোড়ের সোনালী ব্যাংকের বিপরিতে হোটেল গার্ডেন থেকে ৫ জন নারী পুরুষকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ। তবে গ্রেপ্তারকৃতরা অধিকাংশই অল্প বয়সী তরুণ-তরুণী। এছাড়াও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রাখা আছে এসব আবাসিক হোটেলগুলোতে। মূলতঃ দীর্ঘদিন যাবৎ প্রশাসনের নাকের ডগায় থাকা নগরীর বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেলে নিরাপদ মাদক কারবার, মাদক সেবন ও দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল ।
এমনকি এসব হোটেলে পবিত্র রমযান মাসে চালিয়ে গেছে এ সব অনৈতিক দেহ ব্যবসা। পাশাপাশি স্কুল কলেজের পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এসব আবাসিক হোটেলে অবাধে যাতায়াত করে বলে অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন এক প্রকার নীরব ভূমিকা পালন করেছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, নগরীর আবাসিক হোটেল, এ-মালেক, স্বপ্ন পুরী, হোটেল মৌসুমী, সবুজ বাংলা, হোটেল তাজমহল, হোটেল ধানসিঁড়ি, হোটেল আর্কেডিয়া, হোটেল সুন্দরবন, হোটেল সোসাইটি, হোটেল ভিআইপি, ন্যাশনাল, হোটেল সঙ্গিতা, হোটেল গোল্ডেন আপল, এছাড়া ও হোটেল হ্যাবেন ইউ, হোটেল বৈশাখী, হোটেল এশিয়া, হোটেল প্যারিসন হোটেল, রোজ ভ্যালী, সিটিজেন, গ্রীণ সিটি, গাল্ড স্টার, সাউদার্ন, কপোতাক্ষসহ রয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল।
খুলনার নাগরিক নেতা সৈয়দ আলী হাকিম বলেন, খুলনায় আবাসিক হোটেলগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে এখন লজ্জা করে। বর্তমান এমন বেহাল অবস্থা বিশেষ করে নগরীর ডাকবাংলো মোড়, সাতরাস্তা মোড়, সোনাডাঙ্গা, জিরো পয়েন্ট এলাকায় যতগুলো আবাসিক হোটেল আছে সবই একই অবস্থা। উঠতি বয়সী এসব তরুণ-তরুণীরা অবাধে যাতায়াত করছে আবাসিক হোটেলগুলোতে। তবে বর্তমান কেএমপি’র সদ্যযোগদানকৃত পুলিশ কমিশনার এসব আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসা ও জুয়া বন্ধে বেশ তৎপরতা দেখাচ্ছেন। আশাকরি এমন মহৎ কাজ আর বন্ধ হবে না : ধারাবাহিক ভাবে চলমান থাকবে। আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাকে সাধুবাদ জানায়। অনেকে বিত্তবান মানুষ আছে যারা পরকীয়া সত্ত্বে থাকে এসব হোটেলে যাতায়াত করে। এছাড়া যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া শুধু নারী পুরুষ আটক করলে হবে না। এসব অনৈতিক কাজে যে-সব প্রভাবশালী কুচক্রিমহল আছে এদের চিহ্নিত করতে হবে। এর পিছনের শিকড় টেনে উপড়ে ফেলতে হবে।
এ ব্যাপারে কেএমপি’র ডিসি (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, কেএমপি কমিশনার স্যারের নির্দেশে খুলনা নগরীর কোন আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসা চলবে না। কেএমপি’র সকল সদস্যরা এবিষয়ে কঠোর অবস্থানে। এই অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। এছাড়া অন্যান্য কোন জায়গায় দেহ ব্যবসা হচ্ছে এমন তথ্য থাকলে আমাদের অবগত করবেন আমরা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিব।