বাংলাদেশ ক্রিকেটে কোচিং লেভেলে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সবচেয়ে কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত খালেদ মাহমুদ সুজন। কিন্তু দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার পরও পদত্যাগ করার বিষয়ে খালেদ মাহমুদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি হাথুরুসিংহে। জাতীয় দলের শ্রীলংকান কোচের হঠাৎ এভাবে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছেন খালেদ মাহমুদও।
তবে সাবেক এই অধিনায়ক মনে করছেন, আসা-যাওয়া জীবনেরই অংশ। তার ধারণা, হাথুরুর চলে যাওয়াতে বাংলাদেশ ক্রিকেট পথ হারাবে না। খালেদ মাহমুদের মতো জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও মনে করছেন ধাক্কা সামলে সামনে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
শুক্রবার মিরপুর একাডেমি মাঠে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমি অবাক হয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকাতে এবার আমি পাঁচদিন ছিলাম। তখনও তার সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। কোচ আসবে কিনা এখনও নিশ্চিত না আমি।’
তিনি বলেন, ‘হাথুরুসিংহেকে বোর্ডের যতটুকু সমর্থন করা দরকার সেটুকু করেছে। আমি মনে করি, হাথুরুসিংহে এমন কিছু বলবেন না যাতে বোর্ডের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়। জীবন আসলে এমনই- কেউ চলে যাবে, আবার কেউ আসবে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর বাংলাদেশে অনেক কোচ এসেছেন আবার চলেও গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট কিন্তু পথ হারায়নি, এগিয়ে গেছে। আশা করি সামনে আমরা আরও এগিয়ে যাব।’
হাথুরুসিংহে না থাকলে স্থানীয় কোচ হিসেবে খালেদ মাহমুদের নামই শোনা যাচ্ছে। তিনিও চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।
সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘নানা সময়ে নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমি এখানে এসেছি। যখন অধিনায়ক হয়েছিলাম তখন ভাঙাচোরা একটি দলকে দাঁড় করানো চ্যালেঞ্জ ছিল আমার কাঁধে। কোচিং তো অনেক বছর ধরেই করছি। জাতীয় দলের সহকারী কোচও ছিলাম। কোচিংটা খুব কাছ থেকেই দেখেছি। মনে হয় না খুব একটা কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘এ পর্যায়ে এসে ছেলেদের অনুপ্রেরণা দেয়াটা বড় জিনিস। পরিকল্পনা ভালো হতে হবে। দায়িত্ব পেলে ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।’
আগের দিন বোর্ড সভাপতি জানিয়েছেন, দীর্ঘ মেয়াদের জন্য কোনোভাবেই দেশি কোচ নিয়োগ দেবে না বিসিবি। তবে খালেদ মাহমুদ মনে করছেন, দেশি কোচের প্রয়োজন আছে।
এদিকে জাতীয় দলের তরুণ ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ কোচের চলে যাওয়া নিয়ে বলেন, ‘কোচ দলটা ভালোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। তিনিই ভালো বলতে পারবেন কেন চলে যাচ্ছেন। এটাই হয়তো তার কাছে ভালো মনে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টা হঠাৎ করে হয়েছে তাই কোচের চলে যাওয়া নিয়ে এখনও আমাদের কেউ সিরিয়াস হতে পারছেন না। আমাদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনাই হয়নি।’
কোচ চলে গেলে বাংলাদেশের সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে আরেক তরুণ ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যে আমাদের দলে রয়েছেন পাঁচজন। কোচ চলে যাচ্ছেন, তার জয়গায় অবশ্যই অন্য কাউকে আনা হবে। সেক্ষেত্রে যিনি আসবেন এবং সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে চলতে থাকলে আশা করি সমস্যা হবে না।’
কোচের চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। হাথুরুসিংহে তরুণ ক্রিকেটারদের প্রাধান্য দিতেন। নুরুল হাসানেরও অভিষেক হয়েছে এই কোচের সময়ে।
তার কাছ থেকে কী শিখলেন? নুরুল হাসান বলেন, ‘কোচ মানেই তো পেশাদারি হতে হবে। হাথুরুর জায়গায় যিনি আসবেন তিনিও চাইবেন নতুনদের সুযোগ দিয়ে পাইপলাইন তৈরি করতে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার কাছ থেকে ব্যাটিংয়ে কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি।’