• শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন

উল্লাপাড়ায় মামলার বাদির কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি প্রশাসন থেকে গ্রাম পুলিশ টহলের ব্যবস্থার নির্দেশ

আপডেটঃ : রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৭

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার খাদুলী গ্রাম আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে। একের পর এক অভিযোগ, সন্ত্রাসী ও হুমকির ঘটনা ঘটছে। একটি সন্ত্রাসী ঘটনা নিয়ে আদালতের মামলা দায়ের পর বাদীর স্ত্রীকে মারপিট করে জখম এবং মামলা প্রত্যাহার ও ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। খাদুলী গ্রামের সৈয়দ আলী সরকারের নেতৃত্বের একটি সংঘবদ্ধ দলের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।
এদিকে খাদুলী গ্রামের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া এবং বড়পাঙ্গাসী ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রাম্য পুলিশের টহল ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।
বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের খাদুলী গ্রামের মোঃ আনসব আলী গত ২৪ নভেম্বর একই গ্রামের ৪৭ জন কে বিবাদী করে উল্লাপাড়া মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। এ অভিযোগের ১নং বিবাদী হলেন, খাদুলী গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে মোঃ সৈয়দ আলী সরকার। এতে অভিযোগ করা হয়েছে বিবাদীগণ তাদের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ আদালতে দায়ের করা মামলা নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বাদী মোঃ আনসব আলী ও তার পরিবারের লোকজনদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতে থাকে। গত ২৪ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে বিবাদীগণ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সেজে মামলার বাদি আনসব আলীর বসতবাড়ীতে হামলা এবং তার স্ত্রী সাহানারা খাতুন ও ভাই আমজাদ হোসেনকে মারপিট করে আহত করে। এরা অবিলম্বে মামলা তুলে নেয়ার চাপ দেয়। এছাড়া বিবাদীগণ মামলা চালানোর খরচ বাবদ ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বলে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। গত ১১ নভেম্বর খাদুলী গ্রামে সৈয়দ আলী সরকারের নেতৃত্বে দলটি দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে আনসব আলী ছেলে যুবক আব্দুল মোমিনকে পিটিয়ে আহত ও পা ভেঙ্গে দেয়। এ নিয়ে সিরাজগঞ্জ আদালতে ২৩ নভেম্বর খাদুলী গ্রামেরই ৩৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার বাদি হলেন মোঃ আনসব আলী ও ১নং আসামী হলেন সৈয়দ আলী সরকার। সিরাজগঞ্জ আদালত থেকে মামলাটির বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে খাদুলী গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ৩৫ জনকে বিবাদী করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ অভিযোগের ১নং বিবাদী হলেন সৈয়দ আলী সরকার। এতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, খাদুলী মৌজার ৬টি খতিয়ানের প্রায় পোনে ৬ বিঘা ডোবার মাছ মেরে নেয়ার পায়তারা করা হচ্ছে। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সন্দ্বীপ কুমার সরকার গত ২০ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগের বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানান। এছাড়া বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে খাদুলীতে গ্রাম পুলিশের টহল ব্যবস্থা এবং বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভুমি সহকারী কর্মকর্তাকে খাদুলীর সরকারী স্বার্থযুক্ত সম্পত্তি দেখভালের বিষয়ে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এর আগে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসন থেকে খাদুলীর প্রায় ৩শ বিঘা সরকারি সম্পত্তি নিয়ে জরুরী ঘোষনা জারী করা হয়েছে। খাদুলী মৌজার ক ও খ গেজেটভুক্ত জমিতে মাছ চাষ, হালচাষ, ফসলের আবাদে বীজ বোনা ও কাটা সহ যেকোন কার্যক্রম চালানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সন্দ্বীপ কুমার সরকার এ লিখিত আদেশ নামা জারী করেন। স্থানীয় ভুমি অফিস থেকে তা এলাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়। গত এপ্রিল মাসে খাদুলী মৌজার বিভিন্ন দাগের প্রায় ৩শ বিঘা ভুমি চিহ্নিত করে লাল নিশান উড়িয়ে দেয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ