• শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন

সাতক্ষীরায় সাতানী ভাঁদড়া এলাকায় ফসলী জমিতে গড়ে তুলেছেন ইটভাটা

আপডেটঃ : রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৭

এস.কে কামরুল হাসান(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি॥
পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই ৯৬ টি ভাটায় ফলজ ও বনজ কাঠ পোড়ানোর মহোৎসবে মেতে উঠেছে সাতক্ষীরার সাতানী ভাঁদড়া এলাকায় ৫ই জানুয়ারি সরকার পতনের নাশকতা কারী মামলার আসামী, সাতক্ষীরা পৌরসভা ৭ নং ওর্য়াড এর সাবেক কাউন্সিলর আহম্মদ আলীর পুত্র সাইফুল ও তার ভাই আবুল কাশেম এর পরিচালনায় তিন ফসলী জমিতে গড়ে তুলেছে কাগজ পত্র হীন অবৈধ্য ইট ভাটা। এছাড়া অধিকংশ ভাটা মালিকরা নিয়ম নীতির ত্বোয়াক্কা না করে প্রশাসন কে ম্যনেজ করে জ¦লাচ্ছে কাঠ । আর এ অবৈধ থেকে ইট ভাটা থেকে অর্ধ কোটি টাকা মৌসুমী চাঁদা নিয়ে বৈধতা দিয়েছে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলাম। ইট ভাটা মালিকরা ঐ নেতাকে ভাটাপ্রতি বাৎসরিক ২০ হাজার টাকা আর লাইসেন্স বিহীন ভাটার জন্য ৪ লক্ষাধিক টাকা দেওয়া হয় বলে সূত্রে জানা যায়। ফলে মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদককে দেওয়া চাঁদার বলে জেলার ইট ভাটাগুলিতে নিয়মনীতি তে¦ায়ক্কা না করে ফলজ ও বনজ কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশের মারাত্মক জনস্বাস্থ হুমকির মুখে পরছে এইসব অসাধু ব্যবসায়ীরা। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার মোট ইট ভাটা ১৮৪টি। এর মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে ৮৮টির। বাকী ৯৬টি ইট ভাটার কোন ছাড়পত্র না থাকলেও সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলাম প্রতি মৌসুমে তাদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা চাঁদা আদায় করে এর বৈধতা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে চাঁদার একটি ভাগ পৌছে দেয়ায় অবৈধ ইট ভাটা মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ইট প্রস্তুত ও ইট ভাটা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তারা পরিবেশের যে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করছে তা মানব জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রন আইন (২০১) তে সুস্পস্টভাবে উল্লেখ করা আছে যে, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ব্যতিত কোন ব্যক্তি ইট ভাটায় ইট প্রস্তুত করতে পারবে না। কিন্তু সাতক্ষীরা জেলায় লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ইট ভাটা। ঐ আইনে আরও উল্লেখ করা আছে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০ঘর বসতি এলাকা ফলজ ও বনজ বাগান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলে ইট ভাটা অনুমোদন হবে না। কিন্তু এ জেলার প্রত্যেকটি ইট ভাটা গড়ে উঠেছে ঘনবসতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফলজ-বনজ বাগানের নিকটেই। এছাড়া ২০১৩ সালেরঐ আইনে স্থায়ী চিমনির উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ জেলায় স্থায়ী চিমনির ভাটাই বেশি। ঝিকঝাক ভাটার সংখ্যা মাত্র ৩৪টি। এছাড়া সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূর্তভাবে এখনো চলছে টিনের চিমনি দিয়ে ইট পোড়ানোর মহোৎসব। ইট পোড়ানোর জন্য কাঠের ব্যবহার সম্পূর্ন নিষেধ থাকলেও সাতক্ষীরা জেলার বেশিরভাগ ভাটায় হর হামেশেই লক্ষ লক্ষ ঘনফুট ফলজ ও বনজ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে অনুমোদনহীন ইট ভাটা সাতক্ষীরা জেলার বাবুলিয়ায় এসবি ব্রিকস, বাবুল সাহেবের ইটভাটা, ঠিকাদার সিরাজুল ইসলামের সনি ব্রিকস, মকসুদুর রহমানের বিনেপােতায় ও লাবসায় আরবি ব্রিকস, বিনেপোতায় সাইফুল ইসলামের এবি ব্রিকস, হায়দার আলীর খোদেজা ব্রিকস, লিয়কত আলীর একই স্থানে দুটি কামরান ব্রিকস, শুকুর আলীর বিনের পোতায় এবি ব্রিকস ও তার ছেলে মাহবুবের লাবসা বেতলায় এবি ব্রিকস, বিনের পোতায় ভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলামের ভাটা, সাবুদ আলীর ভাটা, মাছখোলায় মালবু ব্রিকস, মাছখোলা ব্রিজের পাশে অজিহার রহমানের অবৈধ ভাটা। অপরদিকে সাতক্ষীরার তালায় গোল্ডেন ব্রিকস, ধুলিহরে মেলেক বাড়ি চৌধুরী ব্রিকস, কুমিরা আচিম তলায় মনু ব্রিকস, কুলিয়া ইসরাফিলের রুমানা ব্রিকস, পারুলিয়ায় রাজু ব্রিকস, রাফছান ব্রিকস ছাড়াও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শ্যামনগর, কালীগঞ্জ, দেবহাটা আশাশুনি ও  কলারোয়ায় অনুমোদনহীন একাধিক ইটভাটায় রেজাউল ইসলামকে চাঁদা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ কার্যক্রম। অবৈধ ইট ভাটায় ফলজ ও বনজ কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে মাছখোলার ভাটা মালিক ওজিয়ার রহমান, বিনেরপোতার লিয়াকত আলী, সাইফুল ইসলাম, কুলিয়া ইসরাফিল এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, প্রতি বছর বিভিন্ন সংস্থানে ম্যানেজ করার জন্য ভাটা প্রতি ২০-৩০ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়া হয় সাধারন সম্পাদক রেজাউল ইসলামকে। আর লইসেন্সের বিষয়ে জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেই ইট ভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক সরদার মটরের মালিক রেজাউল ইসলামের নিকট লাইসেন্স বাবদ দেওয়া হয়েছে। তাই তাদের অনুমোদন লাগে না। এ বিষয়ে আশাশুনী উপজেলার বড়দলের ভাটা মালিক নজরুল ইসলাম ও মাস্টার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইট ভাটায় অনুমোদন লাগে না, যদি জেলা ভাটা মালিক সমিতির চাঁদা সঠিকভাবে দেওয়া হয়। ডিসি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধ ইটভাটার বৈধতা দিয়েছে রেজাউল ইসলাম এমনটাই মনে করেন অবৈধ ইট ভাটা মালিকরা। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দীন বলেন অনুমোদিত ভাটার সংখ্যা ৭৭-৭৮টি। বাদবাকী অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ বিষয়ে খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আনোয়ার মল্লিক বলেন, এ রকম অীভযোগ আমাদের কাছে বহু আছে। গত বছর ২৬ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ