লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। এ পরিস্থিতিতে মিত্রদেশের সহযোগিতায় ইরানের এগিয়ে আসার সম্ভাবনা ধীরে ধীরে প্রবল হচ্ছে। ধারণাটির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রও সজাগ। তারা আগেভাগেই জানিয়ে দিল, লেবানন-ইসরায়েল যুদ্ধে ইরানের হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না তারা। ইসরায়েলে হামলা চালালে ইরানকে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এমন হুঁশিয়ারি দেন। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) এক এক্স-বার্তায় তিনি নিজেই বিষয়টি জানান।
তিনি লেখেন, আমি আজ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে নিরাপত্তা উন্নয়ন এবং ইসরায়েলি অভিযান নিয়ে কথা বলেছি। আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে। লেবানিজ হিজবুল্লাহ যাতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সম্প্রদায়ের ওপর ৭ অক্টোবরের মতো আক্রমণ পরিচালনা করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে এ অভিযান। সীমান্তে আক্রমণের জন্য তাদের অবকাঠামো ভেঙে ফেলার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আমরা সম্মত হয়েছি। আমি নিশ্চিত করেছিলাম যে, সীমান্তের উভয় দিকে বেসামরিক নাগরিকরা যাতে নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য একটি কূটনৈতিক রেজোলিউশন প্রয়োজন। স্পষ্ট করে দিচ্ছি যে- ইরান ও ইরান সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠনের অব্যাহত হুমকির মুখে মার্কিন কর্মীদের, অংশীদারদের এবং মিত্রদের রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভালো অবস্থানে রয়েছে। ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে ইরানকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
এদিকে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নসরল্লাহ নিহতের পর প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির উপপ্রধান নাঈম কাসেম। ওই ভাষণে তিনি যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলের স্থল হামলা রুখে দিতে তারা প্রস্তুত। তিনি যে কোনো পরিস্থিতিতে ইহুদিদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত তিনি বলেন, তারা ইসরায়েলের যেকোনো স্থল হামলা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। গাজা ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে, লেবানন ও এর জনগণের প্রতিরক্ষা, বেসামরিক নাগরিক হত্যা ও গুপ্তহত্যার জবাবে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ অব্যাহত রাখবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করব। ইসরায়েলকে স্থলপথে প্রতিরোধে আমাদের বাহিনী স্থল যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। আমরা জানি যুদ্ধ দীর্ঘ হতে পারে।
অপরদিকে লেবাননিদের পাশে দাঁড়াতে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জনগণের চাপে ইরান। কিন্তু দেশটির ভঙ্গুর সামরিক ব্যবস্থা, ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর নতুন সরকার এবং খোদ তেহরানে হামলা চালিয়ে হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় অপ্রস্তুত খামেনির বাহিনী। জানা গেছে, ইরানের কী করা উচিত তা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। চারজন ইরানি কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। ইরানের রক্ষণশীলরা চাইছে কড়া জবাব দিক তেহরান। তবে মধ্যপন্থি রয়ে-সয়ে দেখতে চাইছে কী ঘটে।