মধ্যরাতে ৮ মাস বয়সী শিশুসহ কলেজের হোস্টেল থেকে অধ্যক্ষকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী
পর পর দুই বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের এক অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নগরীর খুলশী এলাকার অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
কর্তৃপক্ষ মধ্যরাতে তার ৮ মাস বয়সী শিশুসহ কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। অধ্যক্ষের অভিযোগ, কোনো কারণ না দেখিয়ে এক দিনের নোটিশে নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
কলেজ প্রতিষ্ঠানটি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃক দ্বারা পরিচালিত। কলেজটির অধ্যক্ষ নিয়োগ ও চাকরিচ্যুত করার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ নিয়োগ কমিটির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটিও না মেনে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
নোটিশে দেখা যায়, ভুক্তভোগী অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত করার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ওই নোটিশ ৯ অক্টোবর জারি করা হয়। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আরিফুর রহমান নোটিশে সই করেন।
চাকরিচ্যুত অধ্যক্ষ বলেন, “পরপর দুই বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কোনো কারণ না দেখিয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মধ্যরাতে হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর একটি হোটেলে রেখে আসে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড (বর্তমানে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল) কর্তৃপক্ষ।”
তিনি আরও বলেন, “গত বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি পেয়েছিলাম। এরপর অসুস্থতার কারণে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. দিল আনজিজের কাছে যাই। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা করে পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এ অবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করতে থাকে এবং মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলতে থাকেন ‘আপনি গত বছরও চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন এবং এই বছরও আবার ছুটি নেবেন, তাই আপনি পদত্যাগপত্র দিয়ে বিদায় নিয়ে নিন’।
ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ আরও বলেন, “আমি পদত্যাগ না করায় ৯ অক্টোবর সকালে কর্তৃপক্ষ মানবসম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তৎক্ষণাৎ পদত্যাগপত্র দিতে বলে। অন্যথায় টার্মিনেট করা হবে বলে। এরপর আমি পদত্যাগ করব না জানালে তখন একটি ফটোকপি চাকরিচ্যুতির নোটিশ দেয় ও তৎক্ষণাৎ কলেজ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র কলেজ সেক্রেটারির কাছে বুঝিয়ে দিয়ে কলেজ হোস্টেল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আরিফুর রহমান গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।