• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

নেই দুই হাত, পায়ের ‘আঙুল’ দিয়ে লিখে করলেন আলিম পাস

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই, ডান পাও নেই। বাঁ পা থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা খাটো। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেন পড়াশোনা করে সরকারি চাকরি করবে। এরপর বা-মাসহ পরিবারের দায়িত্ব নিজে নিবেন। তাই কোনো বাধাই তাকে পিছপা ফেলতে পারেনি। পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ পাস করেছে অদম্য প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা।

মঙ্গলবার(১৫ অক্টোবর) সিংড়া শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩.২৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।

এর আগে, নাটোর জেলা সিংড়া আল মাদরাসাতুল জামহুরিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।

রাসেল মৃধা নাটোরের সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়া এলাকার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে। ছেলের পাস করার খবর পেয়ে বাবা-মা, ভাইসহ পরিবারের সবাই আনন্দিত।

রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার ছেলে প্রতিবন্ধী হয়েও দুই পরীক্ষায় পাস করেছে। সে জন্য আমিসহ আমার পরিবার অনেক আনন্দিত। অভাব-অনটনের মধ্যেও আমার ছেলের পড়াশোনা বন্ধ করিনি। আমার প্রতিবন্ধী ছেলে তার মনোবল ও ইচ্ছা শক্তিতে আজ সে আলিম পাস করেছে। সে জন্য আমরা সবাই অনেক খুশি। আমার ছেলের এ সফলতার পিছনে শিক্ষকদের অনেক শ্রম রয়েছে। শিক্ষকদের প্রতি চির কর্তৃজ্ঞ। আমার ইচ্ছা সে এভাবে এমএ পাস করে উচ্চ শিক্ষা শেষে তার যোগ্যতায় সে চাকরি করবে। সে জন্য আমার যত কষ্টই হোক আমি ছেলের জন্য তা করব।

শিক্ষার্থী রাসেল মৃধা ঢাকা মেইলকে বলেন, অনেক ভালো লাগছে আমি আলিম পরীক্ষায় পাস করেছি। আমার বাবা দিনমজুরের কাজ করে আমার মতো একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন। আমি আমার বাবা-মার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমার মতো একজন প্রতিবন্ধী মানুষ একটা সরকারি চাকরি যেন দেন। আমি চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা করতে চাই। আমার পরিবারের দায়িত্ব নিতে চাই।

শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোতাররফ হোসেন বলেন, রাসেল মৃধার দুই হাত নেই, একটি পা আছে সেটাও স্বাভাবিক নয়। আঙুল দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেয়। রাসেল নানা প্রতিকুলতার মাঝেও সে পড়াশোনা করে যাচ্ছে। সে দারিদ্র পরিবারের সন্তান। আমরা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সব সময় সহযোগিতা করে আসছি। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩.২৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে। তার ইচ্ছা শক্তির কারণে আজ সে এত দুরে পৌঁচ্ছে। তার জন্য দোয়া করি, সে পড়াশোনা শেষ করে জীবনে উন্নত করুক। তার সাফল্য কামনা করছি।

উল্লেখ্য: ২০২২ সালে রাসেল মৃধা শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে জিপিএ ৩.৮৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ