জনাব খান। বয়স ৪৩ বছর। গত ২ মাস ধরে একটু পরিশ্রম করলেই শ্বাসকষ্ট ও কাশি হয়, রাতে শোয়ার ৩/৪ ঘণ্টা পর কাশি ও শ্বাসকষ্টে ঘুম ভেঙে যায়। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর কাশি ও শ্বাসকষ্ট কমে এবং দুই পায়ে পানি জমতে শুরু করেছে। ৬ মাস আগে তিনি প্রচণ্ড বুকে ব্যথা নিয়ে হৃদরোগ বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। রোগীকে ওষুধ চিকিৎসার পাশাপাশি এনজিওগ্রামের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। এনজিওগ্রামের জন্য আসা হয়নি এবং নিয়মিত ওষুধও খাওয়া হয়নি। তার বুকের এক্সরে ও ইসিজি অস্বাভাবিক, এক্সরেতে দেখা গেল হৃদপিণ্ডের আকার অনেক বড় হয়ে গেছে। স্থানীয় রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসক তার সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীকে রেফার করেন। তিনি বহুদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই। ধূমপান করেন ৭ বছর ধরে। ইকোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষায় দেখা গেল তার হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা অনেক কমে গেছে (EF-34%) এবং হৃদপিণ্ডের আকার অনেক বড় হয়ে গেছে। তার রক্তের বিএনপি (Brain Natriuretic Peptide)-এর মাত্রা অনেক বেশি।
কী কারণে কাশি হচ্ছে
সাধারণত ফুসফুসে কোনো রোগ হলে বা অন্য কারণে ফুসফুস আক্রান্ত হলে কাশি হয়। হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ায় এবং হৃদপিণ্ডের আকার অনেক বড় হয়ে যাওয়ায় রক্ত বা পানি ফুসফুসে জমা হওয়ার কারণে কাশি হয়।
কাশি ভালো হওয়ার জন্য করণীয়
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, ধূমপান ত্যাগ করতে হবে, নিয়মিত হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর ওষুধ খেতে হবে, শরীর ও ফুসফুস থেকে পানি বের করার ওষুধ খেতে হবে বা ইনজেকশন নিতে হবে।
কাশির সিরাপের কোনো ভূমিকা আছে কি
যেহেতু হৃদযন্ত্র দুর্বল, কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ায় ফুসফুসে পানি জমেছে, তাই এ ক্ষেত্রে ফুসফুস থেকে ওষুধ বা ইনজেকশনের মাধ্যমে পানি বের করাই হল কার্যকরী চিকিৎসা, কাশির সিরাপের কোনো ভূমিকাই নেই।
কী কী কারণে কাশি হতে পারে
হার্টের সমস্যা ছাড়াও ফুসফুসের নিজস্ব কোনো সমস্যার কারণে যেমন ইনফেকশন হলে, শ্বাসনালির প্রদাহ বা ইনফেকশন হলে, বুকের মধ্যে যে কোনো অঙ্গে সমস্যা হলে ফুসফুসকেও আক্রান্ত করতে পারে। মধ্যচ্ছদা বা ডায়াফ্রাম যা বুক ও পেটের মাঝে থাকে তা আক্রান্ত হলে, এমনকি যকৃতে বা অগ্নাশয়ে সমস্যা হলে বা পেটে পানি জমলে বা কিডনি সমস্যার কারণে রক্তের অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ যেমন ইউরিয়া বেশি পরিমাণে জমে গেলে, রক্তের ইলেকট্রোলাইট উপাদান অনিয়ন্ত্রিত হলেও কাশি হতে পারে।