• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

চবি’র ভর্তি পরীক্ষায় কোটি টাকার বিনিময়ে ঢাবি’র সহায়তা

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৭

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম সহজতর ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অনুকরণে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চবি প্রশাসন। নিজেদের টেকনিক্যাল প্রযুক্তি না থাকায় ঢাবি থেকে প্রায় এক কোটি টাকার বিনিময়ে টেকনিক্যাল সহায়তা গ্রহণ করেছে চবি। এছাড়া, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ১০ ইউনিট থেকে কমিয়ে চারটি ইউনিট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, এতোগুলো টাকার বিনিময়ে কেন এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা নিজেরা কেন এই প্রযুক্তি তৈরি করতে পারি না। অন্যের কাছে কেন সহায়তা নিতে হবে?
জানা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে এবং শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে দুর্ভোগহীন ও শিক্ষাবান্ধব একটি পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য গত জুলাই মাসে দিকে অনলাইনের মাধ্যমে গতানুগতিক নিয়ম থেকে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে এ বছরের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর জন্য প্রথম ঢাবির অটোমেশন হেড প্রফেসর হাফিজুর রশিদ রহমানের সাথে কথা বলে চবি কর্তৃপক্ষ। পরে ঢাবির সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকের মাধ্যমে টেকনিক্যাল সহায়তা আশ্বাস পায় চবি। তবে এক্ষেত্রে ঢাবি প্রশাসন প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য ব্যাংক সার্ভিসসহ ১২০ টাকা করে দাবি করে। এসময় প্রতিটি  শিক্ষার্থীর জন্য ৯০ টাকা করে দেওয়ার জন্য রাজি হয় চবি। এতে করে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০ টাকা করে মোট ২৫ লাখ টাকা পাবে ব্যাংক চার্জ ও ৭০ টাকা করে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোট ৮৮ লাখ টাকা ঢাবির আইটি বিভাগ। এই টেকনিক্যাল সহায়তার জন্য চবি প্রশাসনকে ১ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মোট ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা দিতে হয়েছে।
ঢাবি থেকে প্রায় এক কোটি টাকার বিনিময়ে টেকনিক্যাল সহায়তার বিষয়ে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের যেহেতু এই ধরনের টেকনিক্যাল সুবিধা নেই সেহেতু টাকার বিনিময়ে এই ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল না। স্বায়িত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমরা কেন নিজেরাই কেন এই প্রযুক্তি তৈরি করতে পারি না। অন্যের কাছে কেন সহায়তা নিতে হবে? ঢাবির আইটি বিভাগ যদি পারে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগ কেন পারবে না কেন? আইটি ও গবেষণার কাজে যে বাজেট রাখা হয় সেটা দিয়ে কি এই প্রযুক্তি তৈরি করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি একটি বড় ব্যর্থতা।
টাকার বিষয়ে স্বীকার করে চবি ব্যবসা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব বলেন, যেহেতু আমরা এই বার প্রথম এই প্রক্রিয়া চালু করেছি। সেই কারণে আমরা ঢাবির  সহায়তা নিয়েছি। তার জন্য আমাদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাও দিতে হয়েছে। তবে পরবর্তী বছরগুলোতে আমরা আসা করবো নিজেরাই নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে। তিনি আরও বলেন, ‘এখানে একটা আর্থিক বিষয় রয়েছে।  ঢাবির যে আইটি ল্যাবরেটরি ব্যবহার করে ভর্তি প্রক্রিয়ার যেসব সেবা প্রদান করা হয় তার জন্য ব্যয় করতে হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে ভিসি স্যারের সাথে আলোচনা করেছি। আমাদের যেহেতু সম্বল আছে তাই আমরা এখন থেকে কাজ শুরু করলে আশা করি ভবিষ্যতে ভর্তি কার্যক্রমে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করবো।’
অন্যদিকে চবি সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড, ফরিদ উদ্দিন বলেন, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আমরা দেখলেও সফটওয়ার নিয়ে একটা বিষয় থাকে। সফটওয়ার হল একটা বিশাল ব্যাপার এটা চাইলেই কিন্তু করা যাবে না। ঢাবি যেহেতু করেছে এদেরটা আমাদের দিবে না। ফর্মুলাও দিবে না সেটা আমাদের অন্য স্থান থেকে ক্রয় করতে হবে। এটা হলো তাদের একধরনের প্যাটার্ন। এখন আমরা যদি নিজ উদ্যোগে করতে চাই তাহলে আমাদের সফটওয়ারগুলোকে উন্নত করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ