চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি॥
খুব ছোট বেলা থেকে দরিদ্র পরিবারের সংসারের ভার কাঁধে নিয়েছে ১৯ বছর বয়সের সাবনুর। জীবন যুদ্ধের লড়ায়ে প্রথমে মাঠে গিয়ে ঘাস কেটে বাজারে বিক্রয় শুরু করে। কিন্তু সংসারের অভাব কুলিয়ে উঠতে না পারায় ঝাঁপিয়ে পড়ে রাস্তায়। দরিদ্র সংসারে অসুস্থ্য বাবা-মাকে বাঁচিয়ে রাখতে লোকচক্ষুর সামনে অটোভ্যানের প্যাডেলে পা রেখে জ্জ বছর থেকে আয় করা শুরু করলো সাবনুর। প্রতিদিন সকালে আর ১০জন অটোভ্যানের মত সেও দাঁড়ায় যাত্রী পেতে রাস্তার আনাচে কানাচে বা বাজার হাটে। যখন যেখানকার যাত্রী পায় তখনি ছুটে চলে গন্তব্যে। তার দিনে আয় কোন দিন ৩শত কোন দিন ৪শত টাকা করে হয়। দরিদ্র সাবনুরের পিতার নাম নজরুল ইসলাম। বাড়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার সুরানপুর গ্রামে। তারা ৫বোন ও ২ ভাই। বোনগুলার বিয়ে হয়ে শ্বশুর বাড়ীতে। ১ভাই কর্মক্ষম অপর ভাই ছোট। সাবনুর আর ১০জনের মত পড়া-লেখা করে শিক্ষিত হতে চেয়েছিলো। কিন্তু নিয়তির কঠিন পরীক্ষায় পড়া-লেখা ছেড়ে সংসারের ভারে এ বয়সে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তার বিয়ে হয়নি এখনও। হঠাৎ এ প্রতিবেদকের চোখে পড়ে য্াত্রী বোঝায় অটোভ্যানে উপজেলার হলিদাগাছীতে। দৌড়ে গিয়ে অটোভ্যানটি দাঁড় করে কথা বলতে চাইলাম সাবনুরের সাথে। যাত্রীর দেরী দেখে অটোভ্যানের উপর থেকেই কথা বলা শুরু করলো। তার কাছে প্রশ্ন ছিলো রাস্তায় অটোভ্যান শকের বশে বের করেছে না আয়ের জন্য। তখন সে ঢুঁকরে কেঁদে তার দারিদ্রতার কথা শুনাতে থাকে। সে বলে ৪র্থ শ্রেনী থেকে পড়া-লেখা করে আর সামনে আগাতে পারেনি। তারও ইচ্ছে ছিলো পড়া-লেখা করার। কিন্তু অভাবি সংসারের কারণে তা হয়ে উঠেনি। অটোভ্যান চালাতে গিয়ে কেউ কিছু বলে কি না জানতে চাইলে সে বলে অনেকে অনেক কথাই বলে কিন্তু কি করার আছে। যারা বলছে তারা তো আর সাবনুরের সংসারের অভাব দূর করে দিবে না। অপলক তাকিয়ে বলে তার অভাবি সংসার কি কেউ চালিয়ে দিবে বলে আবেগের প্রশ্ন করে। শেষে সে কারও দায়া চাই না পরিশ্রমের জন্য যদি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তবে দরিদ্র সংসারটিকে হয়তো স্ববলম্বী করে গড়ে তুলতে পারবে এমন প্রত্যাশা করেছে।