• শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:১৮ অপরাহ্ন

বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পূর্নমিলনী ও বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান

আপডেটঃ : শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭

বাগেরহাট প্রতিনিধি॥
”এসো মিলি ছন্দে আনন্দে প্রাণের মেলায়’’ স্লোগানে বাগেরহাট শহরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পূর্নমিলনী ও বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে তিনদিনের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ফোরামের ব্যানারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েক হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হয়ে নিবন্ধিত হয়ে উপহার সামগ্রী গ্রহণের মধ্যে দিয়ে তিনদিনের অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এরপর তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে আবিরের রং এ রাঙ্গিয়ে নিয়ে মেতে ওঠেন আনন্দ উল্লাসে। যোগদেন মধুর আড্ডায়। এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করার সময় যারা এক সাথে ছিলেন তারা তাদের খুঁজে বের করে সেসময়কার স্মৃতি রোমন্থনে মেতে ওঠেন।শনিবার সকালে বাগেরহাটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্তর থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বাগেরহাট শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে নানান সাজে সেজে প্রায় চার হাজার বর্তমান, নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এরআগে বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা, ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষনা করেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, আয়োজক বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ফোরামের আহবায়ক পারভীন আহমেদসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সরকারী কর্মকর্তারা।বাগেরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্রে ১৯১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রাচীন এই বিদ্যাপিঠ প্রতিষ্ঠা করা হয়। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠটি একশতে পা দিবে। ১৯৪৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৭৪ ব্যাচের প্রাক্তন এবং বর্তমানে অধ্যায়ণরত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এখানে যোগ দেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক, কলেজ শিক্ষক, স্কুল শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, ব্যাংকার হিসেবে অনেকেই কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া যারা চাকরি না করে গৃহিণী হয়েছেন তারাও এই প্রাণের মেলায় যোগ দিয়েছেন।প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের অধ্যাপক বিষ্ণুপ্রিয়া সাহা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত হয়ে এই প্রতিবেদককে বলেন, একশ বছরের নবীন প্রবীণ যারা আছেন তারা সকলে আজ এক সাথে মিলিত হয়েছি। তাই আমাদের মধ্যে একটা আনন্দের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে যা ভাষায় বর্নণা করা কঠিন। আমরা আর হয়ত একশ বছর পাব না। তবে আগামী একশ বছর যারা এখানে পড়বে তাদের জানাই স্বাগতম ও শুভেচ্ছা।আমরা পুরানো সব বন্ধুরা ২২ বছর পর এক সঙ্গে মিলিত হয়েছি। যা বলে বোঝানো যাবে না। আমরা দারুণ মজা করছি। আমরা সবাই আনন্দে আতœহারা হয়ে গেছি।আরেক প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক নারী নেত্রী শিল্পী সমাদ্দার বলেন, শিক্ষার্থী বলেন, ১৯৮২ সালে এই স্কুলে পড়েছি। প্রায় ৩৬ বছর পরে আবার এই স্কুলে আসতে পারব ভাবিনি। ৩৬ বছরের পুরানো বন্ধুদের কাছে পেয়ে আনন্দে দিশেহারা আমরা। এই অনুষ্ঠান আমাদের নতুন পুরানোদের এক মহামিলন মেলা, জীবনের এক স্মৃতি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এইদিনটাকে উপভোগ করতে চাই, এরকম দিন আর আসবে না।আমাদের তা স্মরণ থাকবে। তিনদিনের অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে কেককাটা, স্মৃতিচারণ, সম্মাননা প্রদান, আলোচনা সভা ও সাংষ্কৃতিক সন্ধ্যা। আগামী ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠান শেষ হবে।সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ফোরামের আহবায়ক পারভীন আহমেদ এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রাণের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠের একশ বছর আগামী বছরের জানুয়ারিতে পূর্ণ হবে। তাই আমরা গত তিন মাস ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রাক্তনদের সাথে যোগাযোগ করে তিনদিনের অনুষ্ঠানমালা হাতে নিয়েছি। পূর্নমিলনী ও শতবর্ষ পূর্তির এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করতে আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রম হয়েছে। তবে পুরানো নতুনদের এক সাথে কাছে পেয়ে আমাদের সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে। এই অনুষ্ঠানে ৭৪টি ব্যাচের প্রায় চার হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন। এই অনুষ্ঠান যেন এক প্রাণের মেল বন্ধন। সবাই আনন্দে আতœহারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ