সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি॥
পাট, সরিষা আর গরুর গাড়ী, এই নিয়ে সরিষাবাড়ী। জামালপুরের অন্যতম ও শিল্প শহর সরিষাবাড়ী উপজেলা। বৃটিশ আমলে এখানে ২২টি পাটকল ছিল বিধায় পাটের জন্য বিখ্যাত এ উপজেলা। আর পাট, সরিষা ও গরুগাড়ির জন্য এক সময় বেশ নামডাক ছিল সরিষাবাড়ির। নানা কারণে পাটকলগুলোর অস্তিত্ববিলীন হওয়ায় পাট আবাদে ভাটা আর কালের আবর্তে গরুগাড়ির প্রচলন কমে গেছে। তবে সরিষা আবাদের ঐতিহ্য এখনো রয়েছে। প্রাচীন তথ্যমতে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এখানে সরিষার আবাদ ভাল হওয়ায় বৃটিশ আমলে উপজেলাটির নামকরণ হয় সরিষাবাড়ি। এ বছরও উপজেলায় সরিষার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। উপজেলার চরাঞ্চলগুলো সরিষা আবাদের জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায় দিগন্তজুড়ে এখন সরিষা ফুলের সমারোহ। চারদিকে সরিষা ফুলের গন্ধে মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে গরুর গাড়ীর প্রচলন এখন নেই বললেই চলে। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যেতে বসেছে। পাট চাষেও কিছুটা ভাটা পড়েছে। থেমে নেই সরিষার আবাদ। ৮টি ইউনিয়ন আর একটি পৌরসভা নিয়ে এ উপজেলা। পৌরসভাসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই সরিষার আবাদ করা হয়ে থাকে। চলছে সরিষার মৌসুম। বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে হলুদের সমারোহ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৩শত হেক্টর কিন্তু ২ হাজার ৭শত ৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। অনেক পরে বন্যা আসায় এবং বন্যা চলে যাওয়ার সাথে সাথে রোপা আমন লাগানো এছাড়া মাঝে-মধ্যে বৃষ্টির কারনে সরিষার লক্ষ্যমাত্রায় পৌছানো সম্ভব হয়নি বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়। এ বছর টরি-৭ ও বারী-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করা হয়েছে। বারী-১৪ জাতের সরিষার আবাদ বেশি করার জন্য কৃষককে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবুও উপজেলার মাঠে মাঠে এখন নয়নাভিরাম সরিষার হলুদ ফুলের অপরূপ দৃশ্য। দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। এই অপরূপ দৃশ্যে দেখে মুগ্ধ স্থানীয় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ফলন ভালো হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়া না হলে ও সরিষার দাম ভালো থাকলে কৃষকরা লাভের মুখ দেখবে। এছাড়া সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধকরণ, মাঠ পরিদর্শন, ক্ষতিকর পোকা-মাকড় নিধন ও বাজারজাত সহযোগিতাসহ উপসহকারী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।