বাগেরহাট প্রতিনিধি॥
বাগেরহাটের প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সমাজসেবক প্রেমানন্দ মৃধার (৭৮) জীবনাশান হয়েছে। বুধবার রাত এগারোটা ১৪ মিনিটে বাগেরহাট শহরের পুরাতন জেলখানা সড়কের নিজ বাড়িতে পরলোকগমণ করেন। বৃহষ্পতিবার দুপুরে জেলার কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের উত্তর মঘিয়া গ্রামের বাড়ির মহাশ্মানে তার অন্তষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।প্রেমানন্দ মৃধার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে তার বাড়িতে শুভানুধ্যায়ীরা ভিড় করেন। এ সময় তারা তাকে বিদায়ী ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।কথা সাহিত্যিক প্রশান্ত মৃধার বাবা ছিলেন প্রেমানন্দ মৃধা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দূরারোগ্য মরণব্যাধি ক্যান্সারে ভূগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, পুত্রবধূ নাতি নাতনিসহ অসংখ্য গুনাগ্রাহী রেখে গেছেন।স্কুল শিক্ষক প্রেমানন্দ মৃধা ১৯৪০ সালের ২৩ ডিসেম্বর জেলার কচুয়া উপজেলার উত্তর মঘিয়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত হিন্দু মৃধা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কচুয়া উপজেলার নাটোইখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বরিশালের ব্রজমোহন বিশ^বিদ্যালয়ে বিএসসি পাশ করেন। পরে তিনি রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড করে শিক্ষকতা পেশায়যুক্ত হন। এছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় থেকে ল পাশ করেন। তিনি খুলনা জিলা স্কুল, পিরোজপুর, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন বিদ্যাপিঠে শিক্ষাকতা করেন। ১৯৯৮ সালে খুলনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকা অবস্থায় শিক্ষকতা থেকে অবসরে যান। এরপর তিনি নিজেকে এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডেযুক্ত করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার রচনা করা দিনপঞ্জি ডায়েরি থেকে বাগেরহাটের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা ইতিহাসের বিভিন্ন লেখক তার রচনা থেকে উদ্বৃত করেছেন।তার মৃত্যুতে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক সংগঠন শোক জানিয়েছে।