পাবনা প্রতিনিধি॥
একটানা শৈতপ্রবাহ ও কনকনে শীতে পাবনার বোরো ধানের বীজতলা হলুদ হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের মতে যাকে বলা হয় কোল্ড ডিজিসে আক্রান্ত। এদিকে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আবাদ বিপর্যয় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, রোববার সকালে পাবনায় তাপমাত্রা ছিল ৭.৬ দশমিক। এর আগের দিন শনিবার ছিল ৫ দশমিক ৫ একই ধরণের তাপমাত্রা কয়েকদিন যাবত বিরাজ করছে। যার ফলে শীতের তীব্রতা বেশী।
এদিকে ধানের দাম এবার ভালো পাওয়ায় কৃষক ধান আবাদে ঝুঁকে পড়েছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া বইতে শুরু করায় বোরো আবাদের জন্য প্রস্তুত বীজতলার নষ্ট হওয়ায় আশানুরূপ ফল পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভূতিভুষন সরকার জানান, এবার পাবনার ৯টি উপজেলায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ১শ’ ২৯ মে. টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে ৫০ হজার ৩শ’ ৭২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্দ্ধারণ করা হয়েছে। আবাদের মধ্যে ধরা হয়েছে হাইব্রিড জাতের ১ হাজার ৬৭৮ হেক্টর, উফসি জাতের ৪৮ হাজার ৭৫ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৬শ’ ১৯ হেক্টর জমি। এসব ধান রোপণের জন্য বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৩ শ’ ১৩ হেক্টর জমিতে। সেখানে কৃষক বীজতলা তৈরী করেছেন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী। ৩ হাজার ৩শ’ ১৩ হেক্টরের স্থলে কৃষকরা বীজতলা তৈরী করেছেন ৩ হাজার ৩শ’ ৩৮ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবহাওয়া বিরুপ থাকায় আবাদের কিছুটা সমস্যা হওয়ার আশংকা থেকে যাচ্ছে।
পাবনা কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা লোকমান হোসেন জানান, অগ্রহায়ণের শুরুতে যদি বীজতলা তৈরি করা হয়, তাহলে শৈতপ্রবাহে বীজ-তলায় কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। কিন্তু কৃষক দেরীতে বীজতলা তৈরী করার কারণে এই কনকনে শীতে পড়েছে বীজতলা। ফলে বোরো ধানের বীজতলা হলুদ হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যাকে বলা হয় কোল্ড ডিজিসে আক্রান্ত।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক কৃষিবিদ বিভুতি ভুষন সরকার জানান, ঘন কুয়াশার মধ্যে সূর্যের তাপ পেলে বীজতলার তেমন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। ঘন কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য তিনি কৃষককে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।