সিংড়া(নাটোর) প্রতিনিধি॥
শস্য ভান্ডার নামে পরিচিত সর্ব বৃহৎ বিল-চলনবিল। এ বিলে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হলেও প্রধান ফসল ইরি-বোরো ধান। বিলের পানি নামতে সময় লাগায় বীজ তলা তৈরি ও চারা প্রস্তুতে কিছুটা সময় লাগার পরেও চলনবিলে এখন পুরো দমে ইরি-বোরো ধান রোপণ কাজে ব্যাস্ততা বেড়েছে কুষকের। পৌষের মাঝামাঝি থেকে মাঘের এই তীর্ব শীত আর কুয়াশা যেন প্রকৃতির নয় কুষকের জন্য বড় বাঁধার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।মাঝে মাঝে দিনের শেষে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তরের হীমেল হাওয়ার কারনে শীত যেন প্রখর থেকে প্রখরও তরো হচ্ছে।গরম পোষাক পরার পরেও বাহিরে বের হওয়া যেখানে কষ্টকর সেখানে ঘন কুয়াশা ও তীর্ব শীতের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত চলনবিল এলাকার কৃষকরা ইরি-বোরোর চারা রোপন যেন এক নজীরবিহীন ঘটনাপর সৃষ্টি করছে। পৌষের প্রথমে যে সকল কৃষক জমিতে ইরি-বোরো চারা রোপন করেছে টানা শৈত্য প্রবাহের কারনে অনেক জমির ধানের চারা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে এবং বীজতলার অনেক ধানের চারা হলুল আকার ধারণ করেছে। প্রকৃতির এই সব সমস্যা উপেক্ষা করে কেউবা জমি প্রস্তুত কেউবা বীজতলা থেকে চারা উত্তলণ কেউ বা জমিতে চারা রোপণের কাজে ব্যার্স্ত হয়ে পড়েছে।
চলনবিলে এ বছর ১লাখ ৭৬হাজার ৬৮২হেক্টর জমিতে ইরি বোরো রোপনের সম্ভবনা রয়েছে।চলবিলের বিভিন্ন কৃষি অফিসের সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলায় ৩৯ হাজার ৬১০ হেক্টর,রায়গঞ্জে ২০হাজার ৫৭৬ হেক্টর,উল্লাপাড়ায় ২৮হাজার ৭০০হেক্টর,তাড়াশ ২১ হাজার ৯২০ হেক্টর,শাহাজাদপুরে ২২হাজার ৮১ হেক্টর,গুরুদাসপুরে ৪ হাজার৩১৫ হেক্টর,চাটমহরে ৮হাজার ৫১০হেক্টর,ভাঙ্গুড়া ৬হাজার ২২০ হেক্টর,নলডাঙ্গায় ৬হাজার ৫০০ হেক্টর ও আত্রাই উপজেলায় ১৮হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বরো-ধানের চারা রোপণের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।
সিংড়া উপজেলার আয়েশ গ্রামের কৃষক ওয়াজেদ মোল্লা বলেন, চলনবিলের বর্ষার পানি নামতে সময় লাগায় এবছর বোরো চাষে পিছিয়ে পড়েছি। তিনি আরো বলেন,একটানা কুয়াশা ও ঠান্ডার কারনে কিছু রোপনকৃত জমি নষ্ট হচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান,ঘন কুয়াশা ও তীর্ব শীতের মাঝে ও এবার ইরি-বোরো ধান রোপন করছি।আবহাওয়া যদি একটু ভালো হয় তাহলে ফলনও ভালো হবে।
সিংড়া চলনবিলের মানিকদিঘী গ্রামের দিন মজুর ফিরোজ বলেন, এখন আমাদের আয়ের মৌসুম। ঘন কুয়াশা ও তীর্ব শীতের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত আমরা ইরি-বোরো ধান লাগানোর কাজ করছি।কারন,শীতের কাছে হাড় মানলে আমাদের পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন,চলনবিল মূলত নিচু অঞ্চল বর্ষার পানি নামতে সময় লাগায় কৃষকরা ইরি-বোরো আবাদে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে লাইন লোগো এই পদ্ধতির মাধ্যমে ইরি-বোরো ধান রোপন করছে কৃষরা। এই পদ্ধতিতে কৃষদের আগ্রহ বাড়ছে।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাওসার হোসেন বলেন, চলনবিলে পানি নামতে সময় লাগায় গম ও সরিষা সহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ কম হলেও এবছর বরো ধান লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমান চাষের সম্ভবনা রয়েছে।