• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

সংক্রামকের দেহে যদি পরজীবীর জীবনচক্রের কোনো অংশ সংঘটিত হয় তখন ঐ সংক্রামক প্রাণীকে ভেক্টর বলে

আপডেটঃ : রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

জীববিজ্ঞান প্রথমপত্র

মোহাম্মদ আক্তার উজ জামান, প্রভাষক

রূপনগর মডেল স্কুল ও কলেজ, মিরপুর, ঢাকা

অধ্যায় ৪:অনুজীব

 

আলেয়া বেগম বস্তিতে বাস করে। সেখানে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মশার খুব উপদ্রব। কিছুদিন ধরে তার পালা দিয়ে কাঁপুনিসহ জ্বর আসছে। সেই সাথে রয়েছে তলপেটে ব্যথা ও তীব্র পানি পিপাসা। এ অবস্থায় চিকিত্সকের শরণাপন্ন হলে চিকিত্সক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানালেন, সে এক ধরনের পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।

প্রশ্নঃ ক. সুপ্তাবস্থা কাকে বলে?

প্রশ্ন খ. ভেক্টর বলতে কী বুঝায়?

প্রশ্ন গ. উক্ত পরজীবী আলেয়া বেগমের যকৃতে কীভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়? বর্ণনা কর।

প্রশ্ন ঘ. আলেয়া বেগমের রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবীর জীবনচক্রে কি সুষ্পষ্ট জনুক্রম বিদ্যমান? মতামত দাও।

উত্তরঃ ক. মানবদেহে পরজীবী প্রবেশের পর থেকে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে রোগের সুপ্তাবস্থা বলে।

উত্তর খ. যে প্রাণী সক্রিয়ভাবে রোগ উত্পাদনকারী কোন পরজীবীকে এক প্রাণী থেকে অপর প্রাণীতে সংক্রমিত করে এবং সংক্রামকের দেহে যদি পরজীবীর জীবনচক্রের কোন অংশ সংঘটিত হয় তখন ঐ সংক্রামক প্রাণীকে ভেকটর বলে। যেমন Anopheles মশকী ম্যালেরিয়া পরজীবীর ভেকটর। বাংলাদেশে Anopheles গণভুক্ত ৭টি প্রজাতি ম্যালেরিয়ার পরজীবীর ভেক্টর হিসেবে ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায়।

উত্তর ঃ গ. আলেয়া বেগম ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত। তার দেহে রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবীটি Plasmodium Viva আলেয়া বেগমের যকৃত কোষে সংঘটিত ম্যালেরিয়ার পরজীবীর অযৌন প্রজননকে হেপাটিক সাইজোগনি বলে। এটি নিম্নোক্ত দুটি পর্যায়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

১. প্রি এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি

২. এক্সো রিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি

১. প্রি এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি ঃ Anopheles মশকার লালাগ্রন্থিতে Plasmodium -এর স্পোরোজয়েট দশটি পরিণত অবস্থায় সঞ্চিত থাকে। এ জাতীয় মশকীর দংশনের ফলে স্পোরোজয়েন্টগুলো লালা রসের সাথে আলেয়া বেগমের দেহে প্রবেশ করে এবং রক্তস্রোতের মাধ্যমে বাহিত হয়ে কেমোট্র্যাক্সির এর কারণে যকৃতে এসে আশ্রয় নেয়। এতে নিচে বর্ণিত ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে দেখা যায়:

(i) স্পোরোজয়েট:এগুলো সঞ্চালনক্ষম, অতি ক্ষুদ্র, সামান্য বাঁকানো, উভয়প্রান্ত, সুচালো, দেহবিশিষ্ট। এদের দেহ স্থিতিস্থাপক পর্দায় আবৃত। ৩৪ মিনিট পর স্পোরোজয়েটগুলো রক্তরস থেকে যকৃতের প্যারেনকাইমা কোষের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং এখানেই বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়।

চিত্র: হেপাটিক বা যকৃত সাইজোগনি

(ii) ক্রিপ্টোজয়েট: যকৃত কোষ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে স্পোরোজয়েটগুলো গোলাকার ধারণ করে। তখন এগুলোকে ক্রিপ্টোজয়েট বলে।

(iii) সাইজন্ট:প্রতিটি ক্রিপ্টোজয়েটের নিউক্লিয়াস ক্রমাগত বিভক্ত হয়ে কয়েকদিনের মধ্যে অসংখ্য (প্রায় ১২০০) ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াস গঠন করে। পরজীবীর বহুনিউক্লিয়াসযুক্ত এ অবস্থাকে সাইজন্ট বলে।

ক্রিপ্টোমেরোজয়েটের: সাইজন্টের প্রতিটি নিউক্লিয়াসকে ঘিরে সাইটোপ্লাজম জমা হয় এবং নতুন কোষের সৃষ্টি হয়। এগুলোকে ক্রিপ্টোমেরোজয়েট বলে।

২. এক্সো— এড়িথ্রোসাইটিক সাইজোগনিঃ প্রি-এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনিভে উত্পন্ন মেরোজয়েটগুলো নতুন যকৃত কোষকে আক্রমণ করে এবং এক্সো— এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনির সূচনা করে। এতে নিচে বর্ণিত ধাপগুলো দেখা যায়ঃ

(i) সাইজন্ট: পরিণত ক্রিপ্টোমেরোজয়েটের নিউক্লিয়াস বার বার বিভাজিত হয়ে বহু সংখ্যক ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াস গঠন করে। ম্যালেরিয়া পরজীবীর বহু নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট এ অবস্থাকে সাইজন্ট বলে।               পরের অংশ আগামীকাল


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ