উল্লপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি॥
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া সদর ইউপি কার্যালয়টি দু’যুগেও নিজ সিমানা এলাকায় প্রতিষ্ঠা হয়নি। এ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়টি আজও পৌরসভা এলাকার মধ্যেই রয়েছে। এ ইউপি কার্যালয়ে স্থানান্তরে জায়গা নিয়ে মতবিরোধে তা আর হয়নি। উল্লাপাড়া পৌর এলাকায় আগের কার্যালয় থেকেই ইউনিয়নটির প্রশাসনিক যাবতীয় কার্যক্রম চলছে। এদিকে বর্তমান কার্যালয়টি একটি জরাজীর্ণ ঝুকিপূর্ন ভবন হয়েছে। এ ইউনিয়ন কার্যালয়ে যেতে অন্যের জমি পেরিয়েই যেতে হয়। উপজেলা সদরে হাট খোলা এলাকায় স্থানীয় কামিল মাদরাসার পাশে নিজস্ব দোতলা ভবনে ইউনিয়নটির কার্যালয়। এ্ ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব জমির পরিমান প্রায় ২৪ শতক। বিগত ১৯৯৪ সালে উল্লাপাড়া পৌরসভা গঠন হয়। সে সময়ে উল্লাপাড়া ইউনিয়নভুক্ত উপজেলা সদর সহ ২৩টি গ্রাম নিয়ে পৌরসভাটি গঠন হয়। এতে উল্লাপাড়া ইউনিয়নের আয়তন ও গ্রামের সংথ্যা কমে যায়। বর্তমানে ইউনিয়নটির গ্রামের সংখ্যা ১৪টি এবং আয়তন ৩ হাজার ৬শত ৫১ দশমিক ৯৭ একর। এ ইউনিয়নের ওয়ার্ড গুলো পুনগঠন হয়েছে। এসব হলেও ইউপি কার্যালয়টি নিজ সীমানা এলাকায় হয়নি। স্থানীয় কামিল মাদরাসার মাঠ পেরিয়ে বর্তমান কার্যালয়ে সবাইকে আসা-যাওয়া করতে হয়। কেননা ইউনিয়ন কার্যালয়টি তার নিজস্ব জায়গায়। এ কার্যালয়ে আসা-যাওয়ায় সরকারী জায়গা-রাস্তা নেই। প্রতিদিনই ইউনিয়নটির বিপুল সংখ্যক জনতা কার্যালয়ে তাদের প্রয়োজনে আসে। এর উপর মাসে একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক জনতার সমাগম ঘটে। এ সময় মাদরাসাটির শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বেশ ব্যাঘাত হয়। বিগত প্রায় চার বছর আগে নিজ সীমানা এলাকায় ইউনিয়নটির নিজস্ব কার্যালয়টি স্থানান্তরের মাধ্যমে স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। বিগত চেয়ারম্যান আলহাজ মোঃ আকমাল হোসেন এ উদ্যোগ নেন। এ ইউনিয়নের মধ্যে বাঁখুয়া পশ্চিমপাড়া (মিলপাড়া) এলাকায় জমি কেনা হয়। উল্লাপাড়া কামিল মাদরাসা কর্তৃপক্ষ উল্লাপাড়া সদর ইউপি’র নামে এ জমি কেনে। জানা গেছে, চুক্তি হয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ইউপির নামে জমি কিনে দিবে এর বিনিময়ে মাদরাসা বরাবর ইউপি’র বর্তমান জায়গা স্থানান্তর করা হবে। এ জমি কেনার আগে কার্যালয়ের জায়গা নিয়ে এলাকায় প্রভাবশালী মাতব্বর শ্রেণী ব্যক্তি বিশেষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। আর জমি কেনার পর মতবিরোধ আরো জোরালো হয়। এমন অবস্থায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। জানা গেছে, বাখুয়া গ্রামের প্রভাবশালীদের ক’জন চাইছে ইউপি কার্যালয়টি পূর্বপাড়ায় (ওয়াবদা এলাকায়) হোক। অপরদিকে ভদ্রকোল গ্রামবাসীরা চাইছে তাদের এলাকায় কার্যালয়টি হোক। উল্লাপাড়া সদর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মোঃ আকমাল হোসেন এ কার্যালয়টি স্থানান্তরে প্রয়োজনীতা অনুভব করে তার মেয়াদের শেষকালে প্রায় নয় মাস আগে উদ্যোগ নিয়ে সরকারি বিভিন্ন মহলে লিখিত আবেদন জানান। তিনি বিষয়টি নিয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছেন। এ আবেদনে ইউনিয়ন পরিষদ স্থানান্তর না হওয়ায় সরকারের আরো আটটি দপ্তরের কার্যক্রম সেবা সঠিক ভাবে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। উল্লাপাড়া সদর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মো: আব্দুস সালেক জানান, তিনি নিজ ইউনিয়ন এলাকায় ইউপি কার্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জোড়ালো উদ্যোগ মাঝে মধ্যেই নিচ্ছেন। তার ইউনিয়নের গন্যমান্য ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে জায়গা নিধারণে আলোচনা বৈঠক করছেন। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান জানান, একটি ইউপি কমপ্লেক্স নির্মাণে কমপক্ষে ২৫ শতক জায়গা দরকার। উল্লাপাড়া সদর ইউপি কার্যালয়টি ইউনিয়ন এলাকায় প্রতিষ্ঠা নিয়ে একাধিকবার আলোচনা ও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন এলাকার সুবিধাজনক স্থানে কার্যালয়টি স্থানান্তর করা হলে নাগরিক সুবিধা ও ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রমে গতি বাড়বে।