বিশ্ব চলচ্চিত্রের মর্যাদাকর আসর কান চলচ্চিত্র উত্সবে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার ‘পাম দ্য অর’ জয় করেছে জাপানি চলচ্চিত্র ‘শপলিফটারস’। কানের ৭১তম আসরে গতকাল শনিবার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচনের সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে জাপানি পরিচালক হিরোকাজু কোরি-এদার এই ছবিটিই বেছে নেন বিচারকরা। যাপিত জীবনের দারিদ্র্যকে অনবদ্য শৈলিতে তুলে ধরা হয়েছে শপলিফটার্স ছবিটিতে।
কান চলচ্চিত্র উত্সবের ৭১তম আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার গ্রাঁ প্রি পেলেন মার্কিন নির্মাতা স্পাইক লি। ‘ব্ল্যাকক্ল্যান্সম্যান’ ছবি নির্মাণের স্বীকৃতি হিসেবে ৬১ বছর বয়সী এই নির্মাতাকে দেওয়া হলো এই সম্মান। স্পেশাল পাম দ’র দেয়া হলো ফ্রেঞ্চ নিউইয়েভের রূপকার জ্যঁ-লুক গদারকে। দ্য ইমেজ বুক ছবির সুবাদে এই সম্মান পেলেন তিনি। আর প্রি দ্যু জুরি জিতেছেন লেবাননের নারী নির্মাতা নাদিন লাবাকি। তার কেপারনম ছবির সুবাদে।
সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতলেন ইতালির মার্সেলো ফন্তে। মাত্তিও গারোন পরিচালিত ‘ডগম্যান’ ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের সুবাদে এই স্বীকৃতি দেওয়া হলো তাকে। ‘আইকা’ ছবিতে অভিনয় করে সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন সামাল ইয়েসলিয়ামোভা। এছাড়াও অস্কারজয়ী পোলিশ নির্মাতা পাওয়েল পাউলিকোস্কি তার ‘কোল্ড ওয়ার’ চলচ্চিত্রের জন্য জিতে নিয়েছেন সেরা পরিচালকের পুরস্কার। এবারই প্রথম কানের মূল প্রতিযোগিতায় স্থান পেলেন তিনি। তার ‘কোল্ড ওয়ার’-এর গল্প পঞ্চাশের দশকের প্রেক্ষাপটে এক নতুন মাত্রার প্রেমের গল্প তিনি বলেছেন ছবিতে। একই সাথে অস্কার পুরস্কার পাবার চাইতেও এটি বড় সম্মানের বলে জানান দিলেন এই পোলিশ নির্মাতা। হলরুমে তখন মুহুর্মুহু তালি। কারণ সিনেমা বোদ্ধাসহ সিনেমা ব্যবসায়ীরা কান উত্সবের এই পুরস্কারটি আলাদা ভাবে মূল্যায়ন করেন।
শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ১১টা কানের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় পালে দো ফেস্টিভ্যাল ভবনের গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে বসে কানের সমাপনী আসর।
ফ্রান্সের এই সাগর পাড়ের ছবি উত্সব তাই পর্দা নামার আগে জানান দিলো যে চলচ্চিত্র এই ডিজিটাল গণমাধ্যমে আরো বড় প্রভাব খাটাতে আসছে আমাদের জীবনে। যার নেতৃত্ব দেবে কান উৎসব।
কান উৎসবের পর্দা নামার সাথে সাথে সারাবিশ্বে যে ছবি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনার পর্দা উন্মোচিত হয় সেটি হলো স্বর্ণ পাম বিজয়ী ছবি ও কলাকুশলীদের খ্যাতি। কারণ এই পুরস্কারটি চলচ্চিত্রের জন্য অনেক বড় সম্মানের কেননা, স্বর্ণ পাম বিজয়ীদের নিয়েই বিশ্ব চলচ্চিত্রের বিপণন সংস্থা থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র প্রযোজকরা মেতে থাকেন।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও ক্যামেরা দ’র বিভাগের পুরস্কার বিতরণীর পর মঞ্চে আসেন মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের বিচারকদের প্রধান অস্ট্রেলিয়ান অভিনেত্রী কেট ব্ল্যানচেট। এদিন সকালেই দেখা হলো অভিনেত্রী কেট ব্লানচেটের সাথে। সেখানে বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে ছবি নিয়ে যখন নানান কথা চললো তখনই তিনি শপলিফটার্স ছবিটির ভুয়ষী প্রশংসা করছিলেন। কৌতুহলী মন প্রশ্ন করে বসলো, তবে কি এই ছবিটিউ পাচ্ছে পাম দ’র? মিট মিট করে হাসলেন। তখন অব্দি আমি জানি না যে কেট এর হাত থেকে পুরস্কারটি যাবে। হলরুমে দর্শক সারিতে তাই এ দৃশ্য দেখে কেট এর মুচকি হাসির কথা মনে করিয়ে দিল।