ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস এবং রিচার্ড ব্রানসন সম্পর্কে কে না জানেন। এই তিন বিলিয়নিয়ার নিজেদের কর্মক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের পর এখন প্রতিযোগিতায় নেমেছেন মহাকাশ জয়ের প্রতিযোগিতায়। ইলন মাস্কের দৃষ্টি এখন মঙ্গলের দিকে। জেফ বেজোসের লক্ষ্য চাঁদ আর রিচার্ড ব্রানসনের স্বপ্ন মহাকাশ পর্যটন শিল্পে। মহাকাশ জয়ের প্রতিযোগিতায় কে কতটা সফল হবেন সেটি সময়-ই বলে দেবে কিন্তু সাধারণ মানুষের দাবি তাদের এই প্রতিযোগিতায় জেতার আগে তাদের উচিত সবার আগে পৃথিবীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ইলন রিভ মাস্ক একজন দক্ষিণ আফ্রিকান বিনিয়োগকারী, প্রকৌশলী ও আবিষ্কারক। তিনি মহাকাশ ভ্রমণ সংস্থা স্পেসএক্স এর সিইও এবং সিটিও, বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টেসলা মোটরসের সিইও ও পণ্য প্রকৌশলী, সোলারসিটির চেয়ারম্যান ও পে-প্যালের একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি হাইপারলুপ নামক কল্পিত উচ্চ গতিসম্পন্ন পরিবহন ব্যবস্থার উদ্ভাবক। জেফরি প্রেস্টন জেফ বেজোস একজন মার্কিন ইন্টারনেট উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারী। তিনি একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। ই-কমার্সের ব্যবসা প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও রয়েছে তার মূখ্য ভূমিকা। তার নেতৃত্বে আমাজন.কম বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতায় পরিণত হয়েছে। ২০১৩ সালে তিনি দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট কিনে নেন। ২০১৮ সালে তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ১১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর স্যার রিচার্ড চার্লস নিকোলাস ব্রানসন একজন ইংরেজ ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারী। তিনি ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত রিচার্ড ব্রানসন। ফোর্বসের বিলিয়নিয়ারের তালিকা অনুযাীয় তিনি যুক্তরাজ্যেল চতুর্থ ধনী।
মার্কিন বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘স্পেসএক্স’ এর স্বপ্নদ্রষ্টা এলন মাস্ক মঙ্গল জয়ের লক্ষ্যে প্রিয় রেড চেরি টেসলা গাড়িটিকে পাঠিয়েছেন লালগ্রহ মঙ্গলের উদ্দেশ্যে। এই গাড়িটি পাঠাতে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট ‘ফ্যালকন হেভি ব্যবহার করেছেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র কোন সাহায্য ছাড়াই কাজটি সম্পন্ন করেছে স্পেসএক্স। এই মিশনের উদ্দেশ্য হচ্ছে মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে যন্ত্রপাতি পাঠানো। রকেটটির প্রায় ১৮টি ‘৭৪৭ জেট’ বিমানের সমান ক্ষমতা রয়েছে। স্পেসএক্স জানায়, এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট ফ্যালকন হেভিতে রয়েছে ২৭টি ইঞ্জিন ও ৩টি বুস্টার।
এর দুই বছর আগেই বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস চাঁদের বুকে কলোনি গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা জানান। চাঁদে কলোনি গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে বেজোস ফাউন্ডেশনের ব্লু অরিজিন। অন্যদিকে মহাকাশ ভ্রমণের বিষয়ে বেশ কৌতুহলী রিচার্ড ব্রানসন। অস্ট্রেলিয়াতে নিজের প্রতিষ্ঠানের এক অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা দেন, একটি নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতায় বিজয়ীকে মহাকাশে ঘুরতে পাঠাবেন তিনি। ভার্জনিয়ার ব্যানারেই তিনি বিলাসবহুল ঐ মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ করে দিতে চান। মহাকাশ নিয়ে তাদের এই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ ধীরে ধীরে পৃথিবীবাসীর কাছে বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠছে।-ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক