অনেকেই সপ্তাহের সাত দিন চাকরি কিংবা ব্যবসার প্রয়োজনে যানবাহনে চড়ে দূর-দূরান্ত যাতায়াত করেন। কারো কারো ক্ষেত্রে যানবাহনে উঠলেই শুরু হয় নানা ধরনের অস্বস্তি। গাড়ি চলতে শুরু করলে এই অস্বস্তির পরিমাণ যেন মারাত্মক আকার ধারণ করে। অনেকের মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, ঘেমে যাওয়া, বমি শুরু হওয়া এবং সবশেষে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ ধরনের অসুস্থতাকে বলা হয় মোশন সিকনেস বা ট্রাভেল সিকনেস। মূলত গাড়ি বা যানবাহনের গতির কারণে ত্বক, চোখ এবং অন্তঃকর্ণের মতো যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রভাবিত হয় তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাবেই এই মোশন সিকনেসের শুরু হয়।
মোশন সিকনেস থেকে বাঁচতে অনেকেই পরামর্শ দেন একটানা গাড়িতে না চড়ে বিরতি দিয়ে যাত্রা করা। এছাড়া যাত্রাকালে চুইংগাম এবং আদা চিবোতে থাকলে এ সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি মেলে। তবে এবার মোশন সিকনেসের দারুণ এক সমাধান খুঁজে বের করেছে একটি চশমা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। মোশন সিকনেস কাটাতে তারা আবিষ্কার করেছে বিশেষ এক ধরনের প্লাস্টিক চশমা। ‘সিতরোয়েন’ নামের বিশেষ ধরনের এই চশমাটি বাজারে এনেছে একটি ফরাসি কোম্পানি।
বড়সড় আকারের চশমাটি দেখতে অনেকটাই ‘গুগলে’র মতো। সাদা কাচের অভিনব এই চশমাটি পরলেই নাকি বন্ধ হয়ে যাবে মোশন সিকনেস। চশমাটির সামনের দুটি রিংয়ের মতোই দুই পাশে থাকবে দুটি কাচের রিং। তবে চশমাটি এখনো সেইভাবে বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি। চশমার ফ্রেমে থাকা বাড়তি ঐ রিং দুটি চোখ এবং কানের মধ্যে চেপে বসে থাকবে। মোশন সিকনেস বন্ধ করতে এই চশমায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘বোর্ডিং রিং’ প্রযুক্তি। চারটি রিং এর অর্ধেকেই থাকবে নীল রঙের তরল যা কিনা ঐ রিং এর মধ্যে চলাচল করতে সক্ষম। তবে প্রতিষ্ঠানটি আপাতত যে চশমা তৈরি করছে তা শুধু দশ বছরের বেশি বয়সীদের জন্যই উপযুক্ত।
সব মানুষের ক্ষেত্রে মোশন সিকনেস হয় না আবার সবার মোশন সিকনেসের মাত্রাও এক নয়। অন্য কোনো রোগের কারণে যারা অ্যান্টিবায়োটিক, হাঁপানির ওষুধ, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এবং এমনকি আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপরোক্সেন জাতীয় সাধারণ কিছু ওষুধ যারা গ্রহণ করে তাদের বেলায় এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ২-১২ বছর বয়সী অনেক শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর পরিমাণ কমতে থাকে। আবার যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, তাদের বেলায়ও এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।-সিএনএন।