টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌধুরী মালঞ্চ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মো. মাজেদুর রহমান নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ওই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি মাজেদুর আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মো. মাজেদুর রহমান(২৬) টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের মিরপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আলী আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশেষ পিপি আলী আহম্মেদ জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৬৪ ধারার জবানবন্দি সহ আদালতে চার্জসীট দাখিল করেন। মামলায় দশ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। দুই বছরের মাথায় ঘৃণিত এ মামলার রায় হয়েছে। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। রায় ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় নিহত স্কুলছাত্রীর মা সোহাগী বেগম ও মামলার বাদী সানি আলম ট্রাইব্যুনালের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর বিকালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের মিরপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মাজেদুর একই গ্রামের সাদেক আলীর চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে শান্তা আক্তারকে(১২) ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর শিশুটি কাঁদতে থাকে এবং ঘটনাটি তার মা-বাবাকে জানাবে বলে জানায়। ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে মাজেদুর মেয়েটিকে গলা টিপে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাকের মাধ্যমে হত্যা করে। পরে পাশের একটি ঝোপে তার লাশ ফেলে লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখে।
অপরদিকে, শিশু শান্তাকে না পেয়ে তার পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজি করে। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ওই গ্রামের এক ছোট্ট শিশু শান্তার বাবাকে জানায়- শান্তাকে সে মাজেদুরের সঙ্গে কুশাল বাগানে(আখ ক্ষেতে) যেতে দেখেছিল। পরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়- ঝোপের মাঝে শান্তার মরদেহ পড়ে রয়েছে। ঘটনার দিনই শান্তার বড় ভাই সানি আলম বাদী হয়ে মাজেদুর রহমানকে অভিযুক্ত করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ.বি. ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে মাজেদুর জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান, শান্তাকে ফুসলিয়ে কুশাল ক্ষেতে(আখ ক্ষেতে) নিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের কথা শান্তা তার বাবা-মাকে বলে দেবে বলে জানালে তিনি ভয় পেয়ে যান। পরে তিনি শান্তাকে গলাটিপে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের মাধ্যমে হত্যা করে পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যান। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, অ্যাডভোকেট শামস উদ্দিন। তিনি জানান, ট্রাইব্যুনালের রায়ে তারা ন্যায় বিচার পাননি। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।