জামালপুরে পরকীয়া প্রেমের জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে রিয়া মনি নামে দুই বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। শনিবার (৮এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নের চরযথার্থপুর চান্দাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিন দুপুরে অভিযুক্ত মা ফারজানা খাতুনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সামন থেকে আটক করে পুলিশ। আটককৃত ফারজানা খাতুন একই এলাকার মৃত রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফারজানা খাতুনের সঙ্গে শেরপুর সদর উপজেলার বেতমারি ঘুঘরাকান্দি ইউনিয়নের উত্তরপাড়া এলাকার কদর আলীর ছেলে আব্দল হালিমের সাড়ে চার বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এর মধ্যেই ফারজানা পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। ফারজানা শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে প্রথম রোজার দিন বাবার বাড়িতে চলে আসেন। গত বুধবার সকালে রিয়া মনিকে নানা বাড়ি থেকে শেরপুরে দাদার বাড়িতে নিয়ে আসেন তার বাবা।
পরে ওই দিন বিকেলে শিশুটির নানি
তাকে আবার নিয়ে শেরপুর থেকে জামালপুরে নিজ বাড়িতে চলে আসে। শনিবার সকালে শিশুটিকে তার মা ফারজানা খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ায়। পরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে শিশু রিয়াকে উদ্ধার করে জামালপুর হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফারজানার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা জানান, ফারজানা যখন নবম শ্রেণিতে পড়ে তখন তার বিয়ে হয়। তার স্বামী ফারজানাকে এসএসসি পাস করায় এরপর এইচএসসিতে ভর্তি করিয়ে দেয়। এর মাঝেই ফারজানা একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন।
নিহত রিয়া মনির বাবা আব্দুল হালিম অভিযোগ করে বলেন, সকাল ৯টার দিকে ফারজানা আমাকে ফোন দেয়। সে বলে মেয়ের গলায় বড়ইয়ের বিচি আটকে গেছে। মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। হাসপাতাল আসার পর নার্স স্টাফরা আমাকে বলেন, আমার মেয়েকে বিষপান করানো হয়েছে। বিষপানের কারণে মৃত্যু হয়েছে।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে রিয়া মনিকে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। পরে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মা ফারজানা খাতুনকে আটক করে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।