আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি চলছে। ফলে এবার রেলস্টেশনের পরিবর্তে টিকিট প্রত্যাশীদের লড়াই চলছে অনলাইনে। ২০ এপ্রিলের আগাম ট্রেনের টিকিট বিক্রি চলছে আজ (১০ এপ্রিল) । আগের দিনগুলোর চেয়ে আজ টিকিটের চাহিদা বেশি।
প্রতিবেদন লেখার সময় প্রতি সেকেন্ডে ২০ থেকে ২৫ লাখ হিট পড়ছে। ৯ এপ্রিল ৩ মিনিটে ১ কোটি ৮৪ লাখ হিট পড়েছে। এতে সার্ভারের গতি কমছে। এটাকে রীতিমতো ট্রেনের টিকিট কাটার ‘ক্লিক লড়াই’ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, ৭ এপ্রিল ১৮৫০০, ৮ এপ্রিল ২৫২০০ এবং ৯ এপ্রিল ২৪৫০০ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। আজ ২৭ হাজারের কিছু বেশি টিকিট বিক্রি হবে। গত শুক্রবার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। গতকাল অগ্রিম টিকিটের বিপরীতে ১ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ ‘রেল অ্যাপস’ এ হিট করছে। আগামীকাল ২১ এপ্রিলের টিকিট বিক্রির মাধ্যমে শেষ হবে এবারের অগ্রিম যাত্রার টিকিট বিক্রি। তাই আগামীকাল আরও কয়েকগুণ বেশি চাপ থাকবে।
২২ এপ্রিল ঈদ হবে এমনটা ধরে আজ সোমবার ২০ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই গত তিনদিনের চেয়ে আজ কঠিন হবে টিকিট কাটা।
নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টায় শুরু হয় টিকিট বিক্রি। উত্তরবঙ্গ, ময়মনসিংহসহ যেযব অঞ্চলের ট্রেনের চাহিদা বেশি সেসব ট্রেনের টিকিট এক মিনিটে শেষ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঠিক ৮টায় সার্ভার অন করার সাথে সাথে একসঙ্গে প্রায় ১১ লাখ ক্লিক পড়েছে সার্ভারে। এরমধ্যে প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে সেটা প্রায় ১৫ লাখ হয়ে যায়। আর এক ঘণ্টার মধ্যে ক্লিক সংখ্যা ৫৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে বেশি দূরত্বের গন্তব্যের টিকিটের চাপ বেশি।
সাংবাদিক মো: আসাদুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ যাওয়ার জন্য সকালে সার্ভারে ক্লিক করে দেখতে পান তার জেলার সব ট্রেন টিকিট শেষ। তিনি বলেন সব টিকিট শেষ। বাড়ি যাব কীভাবে ভাবছি। তার দাবি, অনলাইনে টিকিট অনেকটা লটারির মতো। আপনি সার্ভারে ক্লিক করতে থাকবেন লটারি যদি লাগে তাহলে আপনি টিকিট পেয়ে যাবেন।
রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, যারা ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারেননি, সিলেক্ট করতে পারেননি, তার মানে আপনার আগেই সবাই ঢুকে টিকিট করে ফেলেছে। এজন্য আপনি ঢুকতে পারছেন না।
রেল সংশ্লিষ্টরা জানান, অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ১ সেকেন্ডের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার লোক প্রবেশ করেন। ১ মিনিটের মধ্যে কেবিন, এসি ও শোভন চেয়ারের ১০ থেকে ১২ হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। বাকিগুলো ধীরে ধীরে বিক্রি হয়।
কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, রবিবার ও আজ সোমবার আগাম টিকিট প্রত্যাশীরা সার্ভার জটিলতা ছাড়াই টিকিট কিনতে পারছেন। শনিবারের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার টিকিটের বিপরীতে হিট পড়ছে ১৫ লাখেরও বেশি। তিনি বলেন, সক্ষমতার চেয়ে শতগুণেরও বেশি হিট পড়ছে অনলাইনে। কারও ভাগ্যে টিকিট জুটছে, কারও নয়। তবে আমরা শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে টিকিট বিক্রি করছি।
রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি মুহূর্তে কী পরিমাণ টিকিট বিক্রি হচ্ছে, কতটি টিকিট অবিক্রীত তা রেলকে ডকুমেন্টসহ জানাচ্ছে ‘সহজ’। সার্ভারে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লাখ হিট নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে প্রতি সেকেন্ডে ২০ থেকে ২৫ লাখ হিট পড়ছে। ৯ এপ্রিল ৩ মিনিটে ১ কোটি ৮৪ লাখ হিট পড়েছে। এতে সার্ভারের গতি কমছে।
আসনবিহীন টিকিট বিক্রি হবে
যারা টিকিট পাচ্ছেন না তাদের জন্য আসনবিহীন টিকিট বিক্রি হবে। ঢাকা-চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি ৩৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধু যাত্রার দিন আসনবিহীন ২৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার।