দেশে নতুন করে যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০২১ সালে এই রোগে প্রতিদিন ১১৫ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চিকিৎসকরা বলছেন, যক্ষ্মায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার কমাতে সময়মতো রোগ শনাক্তের বিকল্প নেই। তাই পরিবারের একজনের যক্ষ্মা হলে সবার পরীক্ষা করার করার পরামর্শ দেন তারা।
যক্ষ্মা প্রধানত ফুসফুসকে প্রভাবিত করে, তবে এটি কিডনি, মেরুদণ্ড এবং মস্তিষ্ককেও প্রভাবিত করতে পারে। যখন একজন সংক্রামিত ব্যক্তি কাশি বা হাঁচি দেয়, তখন টিবি বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি এমন এলাকায় বেশি দেখা যায় যেখানে কম বায়ুচলাচল এবং জনাকীর্ণ জীবনযাত্রার পরিবেশ রয়েছে।
যক্ষ্মা শনাক্ত করতে খুলনা থেকে পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারটি এসেছে রাজধানী ঢাকার শ্যামলীর ২৫০ শয্যা যক্ষ্মা হাসপাতালে। পরিবারটি জানান, সাত জনের পরিবারের দুই জন এরইমধ্যে যক্ষ্মায় মারা গেছে। তাই এই রোগে মৃত্যু প্রতিরোধে যক্ষ্মা শনাক্তকরণ পরীক্ষা করছে পরিবারটি।
বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, বাংলাদেশ এরমধ্যে অন্যতম- বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের ২০২২ সালের প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় তিন লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে একজন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি নানা সহযোগী সংস্থায় যক্ষ্মার ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস ব্যাকটেরিয়া এই রোগের জন্য দায়ি। এই রোগটিতে মূলত ফুসফুস আক্রান্ত হয়৷ যক্ষ্মা রোগীদের সাধারণ যেমন কিছু উপসর্গ রয়েছে। তেমন এই ভাইরাস মূলত কাশি, হাঁচি থেকে বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়৷
যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা পরিবারের সদস্যরা, শিশু, বয়োবৃদ্ধ, বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং যাদের অন্য সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস, এইচআইভি, কিডনির জটিলতা, ইত্যাদি রয়েছে- এরা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন বেশি। আবার, নতুন করে সুপ্ত যক্ষ্মার জীবাণুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশে সর্বত্র বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই এই রোগের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত তা শনাক্ত করে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। কারণ, যক্ষ্মা হলে শরীরে ক্ষয় বেশি হয়। মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে। তাই দ্রুত শনাক্তের পর চিকিৎসা নেয়া অনেক বেশি জরুরি। যক্ষ্মার এখন চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক উন্নত।